সুপ্রিম কোর্টে বিরাট ধাক্কা! ED-র ৫ যুক্তিতেই মানিকের আবেদন খারিজ শীর্ষ আদালতের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুদিন আগেই কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না সেই ‘সুখ’। শীর্ষ আদালতে বড় ধাক্কা পেলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। পদ থেকে অপসারণে স্থগিতাদেশ পেলেও গ্রেফতারি থেকে মুক্তি পেলেন না তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA)। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দেয়, আপাতত ইডি (ED) হেফাজতেই থাকতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। সেই গ্রেফতারির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বৃহস্পতিবার বিধায়কের সেই আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে মানিক আদালতে যুক্তি দেন, তাঁকে সিবিআইয়ের গ্রেফতারি থেকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার পরও আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ইডি তাঁকে গ্রেফতার করে।

মঙ্গলবার মানিকের এই আবেদনের শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় মামলাটির রায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ। তাঁরা জানান মানিককে ইডির গ্রেফতারিতে কোনও ভুল নেই। এর আগে গতকাল মঙ্গলবারই টেট সংক্রান্ত মানিকের আরও একটি মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের রায় মানিকের পক্ষে যায় বলে মন্তব্য করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বৃহস্পতিবারের রায় গেল একেবারেই বিধায়কের বিপক্ষে।

মানিকের গ্রেফতারি সঠিক কি না, সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের জবাবে সোমবারই আদালতে ২৪ পাতার হলফনামা জমা দেন ইডির আইনজীবী। ওই হলফনামায় মানিককে গ্রেফতারির নেপথ্যে থাকা পাঁচটি কারণও উল্লেখ করে ইডি।

১) শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম জড়ায়। অর্পিতার বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকাও উদ্ধার হয়েছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হিসাবে মানিকও এতে জড়িত থাকতে পারেন বলেই মনে করছেন তাঁরা।

২) মানিকের নামে প্রচুর বেনামি সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। তাঁর ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের নামেও বিপুল সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। মানিকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগের তদন্তও চলছে। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা অত্যন্ত জরুরি ছিল।

৩) তদন্তে জানা গিয়েছে, মানিক টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন। তারও তদন্ত জরুরি।

৪) সুপ্রিম কোর্টের মানিককে দেওয়া অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের বিষয়ে ইডির আইনজীবী বলেন, রক্ষকবচের শর্ত ছিল মানিককে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু বিধায়ক তা করেননি।

৫) শীর্ষ আদালত সিবিআইয়ের মামলায় মানিককে রক্ষাকবচ দেয়। সে ক্ষেত্রে ইডি তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে না, এমন কোথাও বলা হয়নি। মানিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করছে সিবিআই। আর ইডি তদন্ত করছে আর্থিক তছরুপের ভিত্তিতে। দু’টি তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত প্রক্রিয়াও আলাদা। সেক্ষেত্রে সিবিআই মামলার রক্ষাকবচ ইডির মামলায় কার্যকর হবে না।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর