মায়ের পরিচয় যথেষ্ট মেয়ের এসসি স্ট্যাটাস নিশ্চিত করার জন্য, সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়

Published on:

Published on:

Supreme Court orders daughters SC certificate will be available only on mother's identity
Follow

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এক যুগান্তকারী রায় দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আদালতের নির্দেশে পণ্ডিচেরির এক নাবালিকা কন্যা এবার এসসি শংসাপত্র পাবে তার মায়ের জাতির ভিত্তিতে। কারণ বরাবর বাবার জাতির ওপর ভিত্তি করে এই তফসিলি জাতি অর্থাৎ এসসি শংসাপত্র দেওয়া হতো। কিন্তু এবার সেখানেই করা হল বড় পরিবর্তন। আর এই রায়ের প্রভাব বহু মামলায় পড়তে পারে বলে মনে করছেন আইন বিশ্লেষকেরা।

মায়ের পরিচয়েই মিলবে মেয়ের এসসি সার্টিফিকেট, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)

সাধারণত বাবার পদবীর উপর ভিত্তি করে সন্তানদের জাতিগত পরিচয় নির্ধারণ করা হয়। তবে সেই রীতিকে চ্যালেঞ্জ করে শংসাপত্র আদায়ের জন্য একাধিক আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে’ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, পণ্ডিচেরির ওই নাবালিকার মা এসসি তালিকাভুক্ত হলেও বাবা সাধারণ শ্রেণীর মধ্যেই পড়েন। যদিও এর আগে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মায়ের পদবীর ভিত্তিতে ওই নাবালিকা এসসি সার্টিফিকেট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে সে তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।

Supreme Court orders daughters SC certificate will be available only on mother's identity

আরও পড়ুন: হাওড়া ডিভিশনে নন-ইন্টারলকিং কাজের জেরে বাতিল ট্রেন , যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে

মাদ্রাজ হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়। সেই মামলার নির্দেশ দিতে গিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের রায় কে মান্যতা দেয় প্রধান বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। রায় দিতে গিয়ে ২ বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যখন এত বদল হচ্ছে, তাহলে কেন জাতিগত শংসাপত্রও মায়ের পদবীর ভিত্তিতে দেওয়া যাবে না?’

যদিও এবার থেকে এসসি তালিকাভুক্ত মহিলা ও সাধারণ শ্রেণীর পুরুষদের বিয়ে হলে তাদের সন্তানরা মায়ের পদবীর ভিত্তিতে জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। পাশাপাশি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এই মামলাটির আবেদনকারী মহিলা তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্য নিজের বাপের বাড়ির পদবীর ভিত্তিতে এই সার্টিফিকেট এর আবেদন জানিয়েছিলেন।

এই প্রসঙ্গে ওই মহিলা জানান, তার বাবাও মা এবং পূর্বপুরুষেরা আদি দ্রাবিড় জাতির সদস্য। যারা তফসিলি জাতের মধ্যে পড়ে। এবং তার স্বামী সাধারণ শ্রেণীর হলেও বিয়ের পর তিনি নিজে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। পাশাপাশি এই মামলা চলাকালীন ১৯৬৪ সালের ৫ মার্চ ও ২০০২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দুটি গাইডলাইনের কথাও উঠতে আসে। যেখানে বলা হয়েছিল, কারোর জাতিগত পরিচয় নির্ণয় হবে তার বাবার জাত এবং তিনি কোথায় বসবাস করছেন তার ওপর ভিত্তি করে। তবে অতীতের একাধিক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, একটি শিশুর জাতিগত পরিচয় নির্ধারণ হবে তার বাবার জাতের ওপর ভিত্তিতে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) আরও স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, কোন শিশু সাধারণ শ্রেণি প্রতিনিধি হলেও যদি এমন পরিবেশে বড় হয় যেখানে সে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের শিশুদের মতন অথবা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে তাহলে সেই শিশুকে সম্প্রদায়ের সদস্য হিসাবে গণ্য করা যেতেই পারে। যদিও এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নাবালিকার সাথে কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে তাকে এসসি সার্টিফিকেট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই আইনের দিক বিবেচনা করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।