বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নির্বাচনী বন্ড বাতিলের পর রাজনৈতিক অনুদান নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। ঠিক কত টাকা রাজনৈতিক দলের হাতে যাচ্ছে, কে দিচ্ছেন, এসব নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এক জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে আদালত এবার কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনের কাছেই জবাব চাইল।
রাজনৈতিক অনুদান নিয়ে জনস্বাস্থ্য মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) রাজনৈতিক অনুদান সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার ডিভিশন বেঞ্চ মামলাকারীর বক্তব্য শোনার পর কেন্দ্র এবং দেশের নির্বাচন কমিশনকে একটি নোটিস পাঠায়। তাঁদের অবস্থান কী, তা জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, চার সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুরু হবে।
এই প্রশ্ন ওঠায় অনেকেরই মনে পড়ে যায় সেই সময়কার ঘটনা, যখন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় রাজনৈতিক অনুদান নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং ‘ইলেকশন বন্ড’ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালত (Supreme Court) তখন ওই আইনকে সরাসরি অসাংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেছিল।
কেন আবার উঠল নগদ অনুদান প্রসঙ্গ?
এই নতুন মামলাটি দায়ের করেছেন খেম সিং ভাটি নামে এক ব্যক্তি। তিনি আয়কর আইনের ১৩ক(ঘ) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেন। তাঁর দাবি, এই ধারার কারণে রাজনৈতিক দলগুলি অনুদান পেলে আয়কর দিতে হয় না।
তবে নগদে অনুদান দেওয়ারও কিছু নিয়ম আছে। সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদে দেওয়া যায়। কিন্তু এত কম টাকার সীমা থাকা সত্ত্বেও কারা দিচ্ছেন, কত টাকা দিচ্ছেন, এসব তথ্য পরিষ্কার ভাবে জনসমক্ষে আসে না।
ভাটির অভিযোগ, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে নগদ অনুদানের পুরো হিসাব কখনওই প্রকাশ্যে আসে না। তিনি বলেন, একজন ভোটারের স্বার্থেই জানা জরুরি, কারা রাজনৈতিক দলগুলিকে টাকা দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই বড় বড় রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তারা অনুদানের পুরো হিসাব দিচ্ছে না। সেই ঘটনাকেই ভিত্তি করে এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি মামলাকারীর।
কমিশন ও আয়কর বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এখানেই শেষ নয়। মামলাকারী নির্বাচন কমিশন ও আয়কর বিভাগের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, এই দুটি সংস্থাই কার্যত স্বীকার করেছে যে রাজনৈতিক দলগুলির দেওয়া তহবিলের খতিয়ানে ভুলভ্রান্তি রয়েছে। ভাটি দাবি করেছেন, এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। তাই সব তথ্য জনসমক্ষে আনতেই হবে।

সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) আপাতত কেন্দ্র সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জবাবের অপেক্ষায়। চার সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুরু হবে। ইলেকশন বন্ড বাতিলের পরও রাজনৈতিক অনুদান ইস্যু যে পুরোপুরি থামেনি, তা আবারও স্পষ্ট হয়ে গেল আদালতের প্রশ্নে।












