বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে আর ইয়ার্কি ঠাট্টা নয়! এবার সর্দারদের নিয়ে অন্য কোন সম্প্রদায়ের মানুষ এমনকি শিশুদেরও সংবেদনশীল করে তোলার পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এপ্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) পর্যবেক্ষণ শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত বা সর্দারদের নিয়ে অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ কথায় কথায় হাসি মশকরা করে থাকেন।
শিখ-সর্দারদের নিয়ে ইয়ার্কিতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)
এই প্রবণতা দূর করতেই সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন হারবিন্দর চৌধুরী নামের একজন আইনজীবী। তিনি নিজেও একজন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। জানা যাচ্ছে, এই মামলা রুজু করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি ভূষণ আর গভই এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথের বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল।
সেখানে শিখ সম্প্রদায় বা সর্দারদের নিয়ে কোন রকম হাসিঠাট্টা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির করার আবেদন জানানো হয়েছিল। ওই মামলাকারীর দাবি ছিল মশকরা বা ইয়ার্কি করার নামে শিখদের নিয়ে এমন ব্যঙ্গ করা হয় যা নাকি আদতে ভারতীয় সংবিধান বিরোধী। তাই শিখ সম্প্রদায় বা সর্দারদের নিয়ে এই ধরনের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে র উপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আদালতের দাবি এই সমস্যার কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজতে হবে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়। দেখুন যদি বাচ্চাদের স্কুলেই এই বিষয়ে সচেতন ও সংবেদনশীল করে তোলা যায়। এবং অন্যান্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যেতে পারে।’ মামলাকারী আইনজীবী আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যাতে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: মন্দারমণির হোটেল ভাঙার নির্দেশ! হাইকোর্টে মামলা উঠতেই বড় রায় দিলেন বিচারপতি সিনহা
শুধু তাই নয়, একইসাথে তিনি জানিয়েছেন এই নির্দেশের আওতায় সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও শিখদের উদেশ্য করে করা অপমানজনক সমস্ত কন্টেন্ট যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে ফেলা হোক। কারণ তিনি জানিয়েছেন এই ধরনের প্রচার আসলে শিখ সম্প্রদায়ের আত্মসম্মান ও সামাজিক অবস্থান ছোট করছে এবং এ প্রসঙ্গে তিনি বেশ কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাও আদালতের সামনে তুলে ধরেছেন।
প্রসঙ্গত নিজেদের সংস্কৃতি মেনেই শিখ সম্প্রদায়ের পুরুষরা মাথায় পাগড়ি পড়ে থাকেন। কিন্তু এই পাগড়ি পড়া নিয়েও নাকি তাদেরকে সামগ্রিকভাবে ব্যঙ্গ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে এদিন এই আইনজীবীর আবেদনের সমর্থন জানিয়েছে দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটি (ডিএসএমসি)। এদিন আদালত আবেদনকারীর সওয়াল শোনার পর আদালত আইনজীবী চৌধুরী এবং ডিএসএমসি কর্তৃপক্ষের কাছে এই ধরনের অবমাননা রুখতে কার্যকরী প্রস্তাব পেশ করতে বলেছে।