বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য পুলিশের ডিজি তথা কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বনাম সিবিআই মামলায় সোমবার প্রবল ধমক খেল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ৬ বছর আগের একটি মামলায় এখনও পর্যন্ত সঠিক তদন্ত এগোয়নি কেন সেই নিয়েই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সিবিআইকে সরাসরি প্রশ্ন করেন যে, “৬ বছর ধরে কী করছিলেন আপনারা?”
আইনজীবী সওয়ালে বিস্মিত আদালত (Supreme Court)
প্রসঙ্গত, সোমবার রাজীব কুমারের হয়ে আদালতে (Supreme Court) সওয়াল করেন আইনজীবী বিশ্বজিৎ দে। তাঁর দাবি, ৬ বছর আগের মামলা হলেও তাঁর মক্কেলকে একবারও ডেকে পাঠানো হয়নি। বরং একাধিকবার তিনি নিজে তদন্তে সহযোগিতা করতে চেয়েছেন। তবু সিবিআই কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। আইনজীবীর বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন তোলেন যে, “এই ৬ বছর তদন্ত সংস্থা কী করছিল?”
সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। জানা যায় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রশ্নে তুষার মেহতা যে যুক্তি দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট নয় আদালত। অবশেষে বিচারপতি জানান, আগামী শুক্রবার পরবর্তী শুনানি হবে, এবং সেইদিন সিবিআইকে মামলার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
কী নিয়ে শুরু হয়েছিল মামলা?
উল্লেখ্য, ১০ বছর আগে সারদা মামলার তদন্তে তৈরি হয়েছিল বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন রাজীব কুমার। পরে সেই তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। সেই সময় তদন্তকারী সংস্থা অভিযোগ করে যে রাজীব কুমার তদন্তে সহযোগিতা করেননি, বরং গুরুত্বপূর্ণ নথি লোপাট করেছেন। তবে রাজীব কুমার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তিনি সহযোগিতা করতে চান, প্রমাণ নষ্টের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
এরপর ২০১৯ সালে সিবিআই যখন তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য কলকাতায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযান চালায়, তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথে নামেন প্রতিবাদে। রাজীব তখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। পরে শিলংয়ে তাঁকে পাঁচদিন ধরে জেরা করে সিবিআই।
সেই সময় সিবিআইয়ের দাবি জানিয়ে বলে, রাজীব কুমার প্রভাবশালী, তাই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি। তবে রাজীবের পক্ষ জানায়, তিনি সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক এবং সমস্ত নথি নিজে হাতে জমা দেবেন। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) তাঁকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয়, ফলে সেই সময় গ্রেপ্তার করা যায়নি রাজীব কুমারকে। কিন্তু তারপর থেকে সেই মামলারই আজ ৬ বছর পরে আবার শুনানি শুরু হয়েছে। রাজীবের আইনজীবীর অভিযোগ, সিবিআই ইচ্ছে করে মামলা ঝুলিয়ে রেখেছে শুধুমাত্র তাঁর মক্কেলের সম্মানহানি করার জন্য।
সোমবারের শুনানিতে এমনকী পরবর্তী তারিখ নিয়েও আদালতে (Supreme Court) দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ হয়। তবে আদালত তাতে গুরুত্ব না দিয়ে শুক্রবারের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী শুক্রবার।