বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তার পর আবারও সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) উঠতে চলেছে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি রাজীব কুমারের (Rajeev Kumar) বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের (CBI) মামলা। সোমবারই নির্ধারিত হয়েছে শুনানির দিন। প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। জানা গিয়েছে, আদালতের সোমবারের তালিকায় এক নম্বরেই রয়েছে এই মামলাটি।
হাই কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয় সিবিআই
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর রাজীব কুমারকে জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। কিন্তু সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। ২০১৯ সালের ২৫ এবং ২৯ নভেম্বর শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি হয়েছিল। এরপর আদালতের তরফে রাজীব কুমারকে নতুন করে নোটিস পাঠানো হয়। তারপর জমা পড়ে একাধিক আবেদনপত্র। কিন্তু তার পর থেকে আর মামলাটির শুনানি হয়নি। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবার সেই মামলা উঠতে চলেছে আদালতে।
কেন মামলা হয়েছিল রাজীব কুমারের নামে?
সারদা চিটফান্ড মামলার তদন্তে প্রথমে রাজ্য সরকারই গঠন করেছিল বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট (SIT)। সেই সময় কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসেবে রাজীব কুমার ছিলেন সিটের অন্যতম সদস্য। পরে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এই মামলার তদন্তভার দেয় সিবিআইকে। তদন্তে নামার পর সিবিআইয়ের অভিযোগ রাজীব কুমার তদন্তে সহযোগিতা করেননি, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে একাধিক নথি বিকৃত করেছেন, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট হয়েছে।
রাজীব কুমার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছেন। এমনকি মেঘালয়ের শিলংয়ে তাঁকে পাঁচ দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কলকাতার সিবিআই দপ্তরেও হাজিরা দেন তিনি। তবুও সিবিআই চেয়েছিল তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে।
সিবিআইয়ের পদক্ষেপের পর রাজীব কুমার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হন। আদালত প্রথমে তাঁকে রক্ষাকবচ দেয়, যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। তখন আদালত জানিয়েছিল, চাইলে রাজীব আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন। সেই মতো হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তার বিরোধিতা করে ফের সক্রিয় হয় সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল প্রভাবশালী পদে থাকার কারণে রাজীব তদন্তে প্রভাব ফেলতে পারেন।অন্যদিকে, রাজীব কুমারের আইনজীবীরা যুক্তি দেন তিনি তদন্তে সবরকমভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাই হেফাজতের প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুনঃ ‘মমতার ছাতার তলায় আসুন’, ভোটের আগে বাম-কংগ্রেস কর্মীদের তৃণমূলে আসার ডাক দিলেন তৃণমূল বিধায়ক
শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের তরফে রাজীব কুমারকে জামিন দেওয়া হয়। আদালত জানায় বহুবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও নতুন বা চাঞ্চল্যকর প্রমাণ মেলেনি। তবে আদালত জানিয়েছিল, তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে রাজীবকে, অন্যথায় সিবিআই জামিন বাতিলের আবেদন করতে পারবে। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যায় সিবিআই। সোমবার, ছয় বছর পর, সেই মামলাটির শুনানি হতে চলেছে শীর্ষ আদালতে।