বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের গাড়ি কারখানা প্রকল্প বাতিলের জেরে ক্ষতিপূরণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে টানা আইনি লড়াই। ৭৬৫ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্যের আপত্তি শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) খারিজ হয়ে গেল। এর ফলে, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি এবার কলকাতা হাই কোর্টেই চলবে।
টাটার থেকে জমি ফেরন নেয় মমতার সরকার
২০০৬ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানার ঘোষণা করেন। টাটাকে দেওয়া হয়েছিল প্রায় ১,০০০ একর জমি। কিন্তু রাজনৈতিক আন্দোলন ও জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রকল্প সফল হয়নি। পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জমি ফেরত নেয়। তখন টাটা গোষ্ঠী রাজ্যের কাছে জমি ফেরানোর খরচ ও বিনিয়োগ বাবদ অর্থ দাবি করে।
টাটাকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ
এই দাবি নিয়ে সালিশি আদালতে মামলা গড়ায়। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর তিন সদস্যের সালিশি ট্রাইব্যুনাল রাজ্য সরকারকে টাটা মোটরসকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়, সঙ্গে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি অর্থ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত ১১ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার নির্দেশও দেয়।
রাজ্য এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে (Calcutta High Court)। তাদের অভিযোগ ছিল, সালিশি আদালতের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভি এস সিরপুরকরের সঙ্গে টাটার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং শুনানি চলাকালীন টাটা গ্রুপের অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা গেছে। তবে ১৯ জুন বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় রাজ্যের এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে জানান, এর কোনও আইনি ভিত্তি নেই।
হাই কোর্টের রায়ই চূড়ান্ত, বলেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)
এরপর রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যায়। শুক্রবার বিচারপতি পিএস নরসিংহ ও বিচারপতি অতুল এস চন্দুরকরের বেঞ্চ হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে রাজ্যের মামলা খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানায়, ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হাই কোর্টেই হবে। আগামী ১২ অগস্ট বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি নির্ধারিত।
আরও পড়ুনঃ জয়েন্টের ফল প্রকাশে হাই কোর্টের ‘না’, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে সিঙ্গুর শিল্প প্রকল্পের ব্যর্থতা নিয়ে চলছে টানা রাজনৈতিক ও আইনি টানাপোড়েন। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই রায়ে স্পষ্ট হয়েছে, টাটা মোটরসের ক্ষতিপূরণ মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখন নির্ভর করছে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের উপর।