৩২ হাজার চাকরি বরখাস্ত মামলায় নয়া মোড়! সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হয়নি বিচারপতি গাঙ্গুলির রায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল মামলায় বড় নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। একজোটে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানায় হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ নতুন করে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল তার বর্তমানে কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।

অর্থাৎ, সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। তবে বহাল রয়েছে এই মামলার ওপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া একক বেঞ্চের রায়ের একাংশ। কারণ, বিচারপতি একজোটে চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ-করা আবেদনকারীদের বক্তব্য দ্রুত শোনার জন্য হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রথমে একজোটে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গাঙ্গুলি। পরে সংখ্যা পরিবর্তন করে হয় ৩২ হাজার। পর্ষদকে বিচারপতির নির্দেশ ছিল, আগামী চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বিচারপতি এও বলেছিলেন, চাকরিচ্যুতরা আগামী ৪ মাস স্কুলে যেতে পারলেও তাদের পার্শ্বশিক্ষকের বেতন দেওয়া হবে। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরিচ্যুতরা অংশ নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিহারাদের একাংশ। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে হবে না। তারা যেমন ছিলেন তাই থাকবেন। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন নিয়োগ পক্রিয়া নিয়ে দেওয়া নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।

ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই ৩২ হাজার শিক্ষককেও। তারা সেখানে উত্তীর্ণ না হলে চাকরি খোয়াবেন। চাকরি থাকার পরেও কেন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই মর্মে সুপ্রিম কোর্টে যায় চাকরিহারা দের একাংশ ও পর্ষদ কর্তৃপক্ষ।

tet supreme court

এরপর গত ৭ জুলাই এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট ভাষায় জানায়, চাকরি বাতিল নিয়ে মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে তারা কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। তবে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই ৩২০০০ শিক্ষক চাকরি করছেন। তাই তাদের একাংশের বক্তব্য শোনা উচিত ছিল হাইকোর্টের। এরপরেই হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের অন্তর্বর্তী নির্দেশ খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের চাকরি বাতিলের রায় নিয়ে সরাসরি কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। তবে যত দ্রুত সম্ভব হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চকে এই মামলায় ওই ৩২০০০ শিক্ষকের দিকটাও দেখে রায় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এবার ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের দিকে তাকিয়ে সকলে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর