নির্বাচন কমিশনের কড়া নজর! বঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে বাদ সন্দেহভাজন ১০০-রও বেশি বাংলাদেশির নাম

Published on:

Published on:

Suspects excluded from West Bengal voter list.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশি নাগরিকদের ভুয়ো ভোটার কার্ডের জালিয়াতি নিয়ে ফের নড়েচড়ে বসেছে বাংলার (West Bengal) মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতর। গত চার মাসে ১১২ জন বাংলাদেশি নাগরিকের ভোটার কার্ড বাতিল করেছে সিইও অফিস। সরকারি সূত্রের খবর, এই সকল বাংলাদেশি নাগরিককে রাজ্যের মোট ১০টি জেলা থেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৭৫০ জনের বেশি সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিকের ভোটার কার্ড যাচাইয়ের কাজ চলছে। প্রতি মাসে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি নতুন অভিযোগ সিইও দফতরে জমা পড়ছে বলে জানা গিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) ভোটার তালিকা থেকে বাদ সন্দেহভাজনদের নাম:

রাজ্য (West Bengal) নির্বাচন দফতর সূত্রে খবর, চলতি বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয় ভোটার তালিকা থেকে একশোরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের নাম বাদ দিয়েছে। এই তথ্য উঠে এসেছে কলকাতা, মুম্বাই এবং দিল্লি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের সময় ধৃত কিছু বাংলাদেশি নাগরিকের জিজ্ঞাসাবাদের পর। তাঁদের কাছে একসঙ্গে বাংলাদেশি পাসপোর্ট এবং ভারতীয় ভোটার কার্ড পাওয়া যায়। এরপরই তাঁদের আটক করে ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO)-এর মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আরও পড়ুন:ভারতের প্রতিরক্ষা রফতানি পৌঁছল ২৫,০০০ কোটি টাকায়! ২০২৯-এর মধ্যে লক্ষ্য ৫০,০০০ কোটি

ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় ভোটার কার্ডগুলির বিবরণ রাজ্যের (West Bengal) সিইও অফিসে পাঠানো হয়, যেখানে সেগুলির সত্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিইও দফতর পরে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের (ডিইও) তদন্তের নির্দেশ দেয়। জেলা পর্যায়ে ভোটার কার্ডের বৈধতা পরীক্ষা করা হয়, এবং তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার সাত দিনের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। যদি প্রমাণিত হয় যে ভোটার কার্ডটি জাল বা বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছে, তাহলে তা অবিলম্বে বাতিল করে দেওয়া হয় এবং সংশ্লিষ্ট নামটি ভোটার তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়। তদন্তে জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর এবং কোচবিহার—এই দশটি জেলাতেই সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে এই প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি বলেই মনে করছে নির্বাচন দফতর।

সিইও অফিস সূত্রে খবর, FRRO থেকে প্রতি মাসেই ২৫ থেকে ৩০টি নতুন অভিযোগ পাঠানো হয়। এই অভিযোগগুলি পাওয়ার পর রাজ্যের (West Bengal) নির্বাচন দফতর তা দ্রুত তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে পাঠিয়ে দেয়। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয় ভোটার তালিকা, আধার নম্বর, ঠিকানা যাচাই প্রক্রিয়া, এবং নাগরিকত্ব নথির সঙ্গে তুলনা করে যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।

Suspects excluded from West Bengal voter list

আরও পড়ুন:ইতিহাসে এই প্রথম! ভারতের গোল্ড রিজার্ভ অতিক্রম করল ১০০ বিলিয়ন ডলারের গণ্ডি, কী জানাল RBI?

সিইও অফিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “SIR (Special Investigation Review) প্রক্রিয়ার অধীনে আমরা প্রতিটি অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি। বাংলার (West Bengal) সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে। ভোটার তালিকায় কোনও বিদেশি নাগরিকের নাম যেন না থাকে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”

নির্বাচনী মহল মনে করছে, এই পদক্ষেপ শুধু ভোটার তালিকা শুদ্ধিকরণেই নয়, ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব জালিয়াতি রুখতেও বড় ভূমিকা রাখবে। তবে এখনও ৭০০-র বেশি অভিযোগের নিষ্পত্তি বাকি, যার ফলাফলের দিকে কড়া নজর রাখছে রাজ্যের (West Bengal) নির্বাচন কমিশন।