বাংলাহান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল জামানার দুর্নীতি প্রসঙ্গে বরাবরই স্বর তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার তিনি আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা করে গড়ে প্রতি গাছের বিষয়ে মারাত্মক দুর্নীতি হয়েছে। রবিবার এমনই দাবি তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনায় তদন্তের দাবিও তুললেন তিনি।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নন্দীগ্রামে আসেন এক বৃক্ষ রোপন কর্মসূচিতে যোগ দিতে। সেখান থেকেও রাজ্যের শাসক দলকে তুলোধোনা করেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, ‘পরিবেশ দিবসে পরিবেশ রক্ষার জায়গায় লুঠ করেছে তোলামূল পার্টির দ্বারা পরিচালিত এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি। তারা বলে ৫০ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে, দেখাতে বললে নির্মাণ কর্মী ও সহায়ক বলে গরুতে খেয়ে নিয়েছে সব গাছ। প্রতিটি পঞ্চায়েতেই প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার নয় ছয় করেছে রাজ্য সরকার। আমি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে আবেদন করেছি এই বিষয়টিকে নিয়ে যাতে তদন্ত করা হয়, তা দেখার জন্য। উনি আমায় সেই আশ্বাস দিয়েছেন।’
এর পাশাপাশি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘আমি তৃণমূল করতাম। বাম আমলে মিটিং মিছিলে চাকরি চাই, চাকরি দাও আন্দোলনও করেছি। তখন বেকার ছিল প্রায় এক কোটি। এই মমতার সরকারের মাত্র ১১ বছরে বেকারের সংখ্যা হয়েছে দু’কোটি। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক তৈরি হল। এক লক্ষ ছেলে-মেয়ের নাম নথিভুক্তও করল। ১৫০০ টাকা বেকার ভাতা দেবে বলেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু হয়নি কিছুই। সব বন্ধ এখন।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন কি বাত অনুষ্ঠানে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর এই পরামর্শ মতো নিজের বিধানসভা এলাকার মানুষের হাতে কয়েক হাজার চারাগাছ তুলে দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে।
বাংলার বিরোধী দলনেতা রাজ্য সরকারের ব্যর্থতাকে সামনে তোপ দেগে আরও বলেন, ‘বাংলায় শিল্পের বিকাশ হচ্ছে না। বাংলার পাশাপাশি নন্দীগ্রামের বহু যুবককেই অন্য রাজ্যে কাজে যেতে হচ্ছে। রাজ্যের একাধিক শিল্প সংস্থা তাদের একের পর এক কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। ১০০দিনের টাকার দাবিতে পথে নামছে মানুষ।’
আসানসোলের জলকষ্টের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু অধিকারী জানান, ‘বাংলায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে, আমি কথা দিচ্ছি আসানসোলে, নন্দীগ্রামের পাশাপাশি গোটা রাজ্যের জল কষ্ট দূর করব।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন ছিল। সেদিন তুমুল গন্ডগোল শুরু হয় বিধানসভায়। বিজেপি ও তৃণমূল বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি, চুলোচুলি, জামা ধরে টানাটানির মতো ঘটনা ঘটে রাজ্যের আইনসভায়। এমনকী রক্তপাতও হয় এই ঘটনা ঘিরে। এরপরই বিধানসভা থেকে পাঁচজন বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁরা হলেন শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গা, শঙ্কর ঘোষ, নরহরি মাহাতো, দীপক বর্মন।