বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পরিদর্শনে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে খগেনবাবুর চোখের নীচের হাড় ভেঙে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুর্গত এলাকায় বিশাল কনভয় নিয়ে ঢোকার কারণেই সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, “৩০-৪০টা গাড়ি নিয়ে ঢোকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।” তবে বিজেপির মতে, এটি নিছক ‘জনরোষ’ নয়, বরং শাসকদলের মদতেই ঘটেছে এই হামলা।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্যের রাজনীতি। মঙ্গলবারই খগেন মুর্মুকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি কটাক্ষের সুরে মমতার মন্তব্যের জবাব দেন।
‘যাঁর জোড়া হেলিকপ্টার, জোড়া চার্টার্ড ফ্লাইট, তাঁর মুখে মানায় না’ অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “আমরা ৮ জন বিধায়ক, ৩ জন সাংসদ, আর ৫টা গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলাম। ১২টা মিডিয়ার গাড়ি আলাদা ছিল। এখন কে বলছেন! যাঁর জন্য রাস্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থাকে, দড়ি টানা থাকে, আর যিনি ২৫০-৩০০ গাড়ি নিয়ে বের হন তাঁর মুখে এসব কথা মানায় না।” শুভেন্দু আরও বলেন, “যাঁর জোড়া হেলিকপ্টার, জোড়া চার্টার্ড ফ্লাইট, তাঁর মুখে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের তত্ত্ব মানায় না। এটা সরাসরি প্রশাসনিক ব্যর্থতা।”
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার দুধিয়ায় দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমি তিনটে গাড়ি নিয়েই যাই। একটা সামনে, একটা মাঝে, একটা পিছনে। রাস্তা খারাপ, পাহাড়ে প্রেশার পড়ে। তাই আমি কড়া নির্দেশ দিয়েছি কেউ তিনটে গাড়ির বেশি নিয়ে যাবে না।” মমতার দাবি, এত বড় কনভয় নিয়ে ঢোকার ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ জমে ওঠে। তবে বিজেপির বক্তব্য, “এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা, যাকে প্রশাসন জনরোষ বলে চালাচ্ছে।”
আরও পড়ুনঃ ত্রিপুরায় তৃণমূল অফিসে হামলা, পুলিশের নীরবতা নিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক
উল্লেখ্য, ঘটনার পর একদিন কেটে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, তৃণমূলের প্রভাবেই পুলিশ নীরব। দলীয় মহলে এখন প্রশ্ন যখন ক্যামেরাবন্দি হামলাকারীদের চিহ্নিত করা গেছে, তখনও কেন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি? প্রসঙ্গত, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে হাই কোর্টে যাওয়ার হুশিয়ারিও দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।