বেঁধে রাখব, খেলা হবে! শুভেন্দুর ওপর হামলায় হয়েছে FIR, এবার ফোনে ভয়ঙ্কর হুমকি সেই তৃণমূল নেতার

Published on:

Published on:

suvendu adhikari(3)

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। মঙ্গলবার কোচবিহারে এসপি অফিস অভিযান ছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতার। তাঁর কনভয় কোচবিহারের (Coochbehar) খাগড়াবাড়ি এলাকায় পৌঁছতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূলের সমর্থকরা। এরপর শুরু হয় ‘হামলা’। অভিযোগ, ইট বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক গাড়ি।

তৃণমূল নেতার অডিও ঘিরে অস্বস্তি বাড়ল শাসকশিবিরে

হামলার ঘটনার পরই শুভেন্দুর সরাসরি অভিযোগ ছিল, ‘যাঁদের আমি দেখেছি, তাঁরা প্রত্যেকেই রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলমান।’ বিজেপি ছাড়াও বিরোধী দলনেতার উপর হামলা পূর্ব পরিকল্পিত বলে দাবি করেন বিরোধী নওশাদ সিদ্দিকীর মত নেতারা। ইতিমধ্যেই হামলার ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তাতে কী আদৌ শান্ত হয়েছে পরিস্থিতি? উত্তরটা হল না।

শুভেন্দু অধিকারীর উপর যারা আক্রমণ চালিয়েছে বলে অভিযোগ, তাদের মধ্যেই একজনের আরেক কাণ্ড এবার সামনে। নাম ধরনীকান্ত বর্মণ। শুভেন্দু জানিয়েছেন এই ব্যক্তির নাম তাঁর ওপর আক্রমণের অভিযোগ পত্রের অভিযুক্তদের তালিকার ১১ নম্বরে রয়েছে। এদিন সমাজমাধ্যমে এক অডিও প্রকাশ করে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘তৃণমূলের হুমকি সংস্কৃতির ‘উজ্জ্বল’ নিদর্শন।’

শুভেন্দু লিখেছেন, “কোচবিহারের ঘোকসাডাঙ্গা এলাকার বিশিষ্ট তৃণমূল ‘হার্মাদ’ নেতা; শ্রী ধরনীকান্ত বর্মণ মহাশয়ের নাম আমার ওপর আক্রমণের অভিযোগ পত্রের অভিযুক্তদের তালিকার ১১ নম্বরে রয়েছে। তাই গাত্রদাহ মেটাতে উনি কোচবিহার জেলার ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রশান্ত বর্মণ কে নির্দ্বিধায় হুমকি দিচ্ছেন। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি, এখানে আইনের শাসন নয় শাসকের আইন চলে, তাই কালক্রমে যদি কোনো শাসক নেতা আইনি প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়েন তাহলে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ধরা কে সরা জ্ঞান করেন।”

শুভেন্দুর পোস্ট করা অডিওতে যা শোনা যাচ্ছে…

ধরনীকান্ত বর্মণ: শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি আমি ভেঙেছি তাই তো?

প্রশান্ত বর্মণ: হঠাৎ এই কথা?

ধরনীকান্ত বর্মণ: তুই নাম দিলি আবার এই কথা? তুই নাম না দিলে আমার নাম কীভাবে আসলো?

প্রশান্ত বর্মণ: ঘোকসাডাঙ্গা বিজেপির কী শুধু আমি একাই আছি?

ধরনীকান্ত বর্মণ: বর্তমান তুই একাই। তাহলে ঘোকসাডাঙ্গায় বিজেপির কে আছে? নাম বল

প্রশান্ত বর্মণ: শুভেন্দুদা কী আমাকে জিজ্ঞেস করে নাম বলেছে?

ধরনীকান্ত বর্মণ: তুই তো এখন জেলায় সাধারণ সম্পাদক

ধরনীকান্ত বর্মণ (হুমকির সুরে): “আমার যখন নাম পড়েই গেছে, আমি যখন তৃণমূলের হার্মাদ বাহিনী, রোহিঙ্গা… নম্বর লাগিয়ে দিলাম। ওয়েট এন্ড সি। তোর দাদা বলে দিয়েছে তোকে। দেখা হবে ভাই। কথা পরে আগে কাজ। কালকে ঘোকসাডাঙ্গায় চলে আসিস। তোকে নিমন্ত্রণ করলাম চিকেন, মুরগা সব হবে। পার্টি দেব আমি ক্লাবে। বিশেষ করে তোর জন্য। আর সজলকে বলে দিস তোর দাদা বলে দিয়েছে আবার রাজনীতিতে যুক্ত হলাম। কারণ আমরা রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি। কাল থেকে আমি রোহিঙ্গা সার্টিফিকেট তোর আর সজলের কাছ থেকে নেব।”

আরও পড়ুন: ‘ভয় পেয়েছেন মাননীয়া!’ নবান্ন ঘেরাওয়ের আগে গায়েব মুখ্যমন্ত্রী, কটাক্ষের ঝড় তুললেন শুভেন্দু

ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়ে, “যতক্ষণ তোরা আমাকে রোহিঙ্গা সার্টিফিকেট না দিবি, আমি তোদের উল্টো করেও রাখতে পারি, বেঁধেও রাখতে পারি বাজারে। ঘোকসাডাঙ্গায় এসে দেখাস। এবার খেলা হবে। জয় বাংলা খেলা হবে।”

Attack on Z-category leader Suvendu Adhikari sparks law and order concerns

https://www.facebook.com/share/v/1GLhq1snts/?mibextid=wwXIfr

উল্লেখ্য, শুভেন্দুর ওপর হামলার ঘটনায় যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক বলে জানা গিয়েছে। Z ক্যাটেগরির নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও হামলা হল, এই নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে শুভেন্দু বলেছিলেন, ঘটনার পেছনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর হাত রয়েছে। তাঁর নামেও এফআইআর দায়ের হয়েছে। এরই মধ্যে শাসকদলের নেতার যে ভয়ঙ্কর হুমকি বার্তা সামনে এল তাতে আরও অস্বস্তিতে বঙ্গ শাসকদল।