বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দার্জিলিং পাহাড়ে ফের উত্তপ্ত রাজনীতি। গোর্খাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র চিঠি লিখেছেন মমতা। আর এই চিঠি নিয়েই পাল্টা সুরে মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
মমতার চিঠি নিয়ে আক্রমণ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) এদিন মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠি প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বলেন, “এমন কোনও চিঠি লেখার অধিকার মুখ্যমন্ত্রীর নেই।” শুভেন্দু আরও বলেন, “পাহাড়ে কেন্দ্র যা করছে, তা সম্পূর্ণ সাংবিধানিক। গোর্খা সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা কেন্দ্রের অধিকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করছেন না, সেটাই কেন্দ্রকে করতে হচ্ছে।”
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াতেও সুর চড়ান শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। শুভেন্দু বলেন, “আমরা সকলে সংবিধান মেনে কাজ করি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজেকে সংবিধানের ঊর্ধ্বে মনে করেন।”
এদিন রাজনৈতিক বক্তব্যে শুভেন্দু ফের তুলে আনেন SIR ইস্যুও। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষ এখন বলছেন SIR না হলে তারা ভোট দেবেন না। নির্বাচন আসন্ন, ফলে SIR হবেই। অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো হবে। আর তৃণমূলও ধীরে ধীরে শক্তি হারাবে।”
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, গোর্খা সমস্যা নিয়ে কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা চিঠিতে স্পষ্ট করেন, “পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে গোর্খাদের সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার একতরফাভাবে একজন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছে। এটা আমাকে বিস্মিত ও হতবাক করেছে।”
মমতার আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত গোর্খা অঞ্চলের সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে তিনি অনুরোধ করেছেন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “এই একতরফা সিদ্ধান্তে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছি, নিয়োগটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক।”
আরও পড়ুনঃ “কয়েকশো ভিডিও আছে, ৪ নভেম্বরের পর প্রমাণ সহ দেখাব”, কিসের কথা বললেন শুভেন্দু?
দার্জিলিং পাহাড়ে গোর্খা স্বশাসন, উন্নয়ন এবং পরিচয় ইস্যু দীর্ঘদিন ধরেই সংবেদনশীল। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন মধ্যস্থতাকারী নিয়োগের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ফের একবার মুখোমুখি রাজ্য ও কেন্দ্র। একদিকে মমতার চিঠিতে প্রশাসনিক যুক্তি, অন্যদিকে শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) সোজাসাপটা সাংবিধানিক ব্যাখ্যায় দুই পক্ষের টানাপোড়েনে পাহাড়ের রাজনীতি ফের তপ্ত হতে শুরু করেছে।