বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাঙালি অস্মিতা এখন তৃণমূলের রাজনৈতিক হাতিয়ার? এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ‘রক্ষাকবচ’ হয়ে উঠতে চাওয়ার অভিযোগ তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে প্রশাসনে ‘অবাঙালি আধিপত্য’ ও শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রীর ‘দু’মুখো রাজনীতি’র তীব্র সমালোচনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) প্রশ্ন, “আপনার চোখে কি বাংলা ভাষাই বাঙালি পরিচয়ের একমাত্র মানদণ্ড?” তাঁর দাবি, “যাদের ভিডিও দেখিয়ে রাজনীতির প্রচার চলছে, ভাষা বাদ দিলে, এদের পরিধান, এদের সংস্কৃতি, এদের জীবনযাপনের ধারা দেখে বোঝার উপায় আছে যে এরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে কাজের অভাবে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় এসে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে, নাকি আপনার অসহযোগিতার কারণে ও জমি না দেওয়ায়, ভারত সরকার সীমান্তে ৫৪০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া না দিতে পারায়, এরা বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ভারতবর্ষে ঘাঁটি গেড়েছে?” এভাবে বাঙালি পরিচয়ের আড়ালে রোহিঙ্গা (Rohingya) বা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলেই অভিযোগ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে শুভেন্দু আরও লেখেন, “হাজার হাজার খাঁটি বাঙালি আজ আপনার দুর্নীতির জন্যে শিক্ষকতার চাকরি হারিয়ে রাজপথে বাংলা ভাষায় আর্তনাদ করছে, তাদের কথা আপনার কানে পৌঁছচ্ছে না কেন? অথচ ভিন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আর্তি আপনি ঠিক শুনতে পাচ্ছেন!” টিএট-এসএসসি দুর্নীতি (teacher recruitment scam) প্রসঙ্গে তিনি তৃণমূল সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য, যারা প্রকৃত বাঙালি, শিক্ষিত, যোগ্য—তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ ভোটের রাজনীতিকে সামনে রাখছেন।
শুভেন্দুর তোপ, মুখ্যসচিব পদে মনোজ পন্ত (Manoj Pant) বা ডিজি পদে রাজীব কুমার (Rajeev Kumar), এঁদের বেছে নেওয়া হয়েছে সিনিয়র বাঙালি অফিসারদের (Bengali officers) উপেক্ষা করে। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “অত্রি ভট্টাচার্য ও সুব্রত গুপ্ত বা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়দের মতন অভিজ্ঞ বাঙালিদের বাদ দিয়ে কি সরকারের ভরসা এখন শুধুই ‘বাইরের লোকেদের’ উপর?” সবমিলিয়ে বিরোধী দলনেতার তোপ, মুখ্যমন্ত্রীর বাঙালি অস্মিতা রক্ষা আসলে “ভোটের রাজনীতি (vote politics) ও দুর্নীতির নজর ঘোরানোর কৌশল।”
শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে ফের রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠছে, বাঙালির স্বার্থ আদৌ কোথায়?