বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত হয়েছে ১,৮০৪ জন ‘অযোগ্য প্রার্থী’র নাম। সেই তালিকাতেই উঠে এসেছে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নাম। নাম প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দাবি, এই ঘটনা প্রমাণ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিক্ষাক্ষেত্রকে কলুষিত করেছে।
নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে ‘মহাদাগি সরকার’ বলে উল্লেখ করলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করে বলেন, “এটা মহাদাগি সরকার।” তিনি আরো বলেন, “শাসক দল নিজেই স্বীকার করেছে তারা “চাকরি চোর”। এই দুর্নীতির সম্পূর্ণ দায় মুখ্যমন্ত্রীর।” তাঁর অভিযোগ, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ১৪০০ জন প্রার্থীর অ্যাডমিট বাতিল হওয়া প্রমাণ করে সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীদের রক্ষা করেছিল। জীবনকৃষ্ণ সাহার মতো দালালেরা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অভিষেকের এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে, এবং এই দুর্নীতির ৮০% টাকা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি।”
শনিবার প্রকাশিত অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকায় দেখা যায়, তৃণমূল নেত্রী সাহিনা সুলতানা ও তাঁর আত্মীয়দের নাম রয়েছে। জেলা পরিষদের দায়িত্ব সামলানো সাহিনা শিক্ষক পদে নিয়োগ পান, তবে স্থানীয়দের দাবি, স্কুলে তাঁকে দেখা যেত না প্রায়। শুধু তাই নয়, পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষের পুত্রবধূ শম্পা ঘোষ এবং সোনারপুর পুরসভার কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষের নামও তালিকায় উঠে এসেছে। এতে আরও জোরদার হয়েছে বিরোধীদের অভিযোগ যে নিয়োগ দুর্নীতি শাসক দলের শিকড় পর্যন্ত ছড়িয়ে।
তালিকায় প্রার্থীদের নাম ও রোল নম্বর থাকলেও, স্কুল, বিষয় বা ঠিকানা উল্লেখ নেই। বিরোধীদের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে এই তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এক্স-এ (X) লিখেছেন, “তথ্য আড়াল করে প্রকৃত যোগ্যদের সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গেই লুকোচুরি চলছে।” শিক্ষাক্ষেত্রে স্বচ্ছতার প্রশ্নে ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
আরও পড়ুনঃ তিন বছরে উধাও ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থী, সরকারি স্কুলে ভর্তির হার নিয়ে চিন্তায় শিক্ষামহল
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে শাসক ও বিরোধী দলের লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রকাশিত তালিকা সামনে আসার পর শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) সহ আরও বিরোধী নেতারা দাবি করছে এর মধ্য দিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ‘অস্বচ্ছতা’ ও ‘দুর্নীতি’ প্রমাণিত হল। আগামী দিনে এই ইস্যু রাজ্যের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে।