বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নাগরাকাটা হামলায় উত্তপ্ত রাজনীতি। আক্রান্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে দেখতে মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে গেলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এছাড়া দেখা করেন আক্রান্ত বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সাথেও। এরপর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু জানান, খগেন মুর্মুর আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। চোখের নীচের অতি স্পর্শকাতর হাড় ভেঙে গিয়েছে তাঁর। চিকিৎসকরা তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari)
হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, “ছাব্বিশে এই রক্তের বদলা সুদ সমেত উসুল করা হবে।” তাঁর নিশানায় ছিল রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তা রাজীব কুমারও। তিনি সতর্ক করে বলেন, “বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা হবে। জলপাইগুড়ির এসপি, ডিজিপি রাজীব কুমার ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন। স্পিকারের কল আসবে।”
এই মন্তব্যের মধ্যেই রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বেড়েছে। উল্লেখ্য, লোকসভার স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে নাগরাকাটা হামলার রিপোর্ট তলব করেছেন। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “রাজ্যকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে হবে, না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কীভাবে ঘটল হামলা?
সোমবার দুপুরে ভয়াবহ বৃষ্টিপ্রবণ নাগরাকাটার দুর্যোগকবলিত এলাকা ঘুরতে যান মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনডাঙা এলাকায় পৌঁছতেই তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে বিক্ষোভ শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কেউ লাঠি, কেউ জুতো, কেউ আবার নদীর ধারে থেকে পাথর তুলে ছুড়তে থাকে তাঁদের দিকে।
গাড়ি থেকে নেমে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন সাংসদ খগেন মুর্মু। সেই সময়ই অতর্কিতে ছোড়া ইট গিয়ে লাগে তাঁর চোখের নীচে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মুখে ও চোখের নীচে আঘাত গভীর।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “রাজ্য সভাপতির দাবিকে আমি সমর্থন করছি। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তের প্রয়োজন আছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কোনও উগ্র সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।” প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করে নাগরাকাটা হামলার ঘটনায় NIA তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগের শুনানি হবে খবর সূত্রের।