বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘শুভেন্দু অধিকারী আর কোনোদিন নন্দীগ্রামের বুকে জয়লাভ করতে পারবেন না’, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন তাঁর দলেরই কর্মীরা। শুনতে অবাক লাগলেও বর্তমানে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এক প্রকার অভিমান নিয়েই বিজেপির (Bharatiya Janata Party) সঙ্গ ত্যাগ করলেন শতাধিক বিজেপি নেতা কর্মীরা। বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এদিন একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দেন তারা সকলেই।
গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ভোটে জয় লাভের সম্ভাবনা দেখালেও শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের কাছে পরাজিত হয় ভারতীয় জনতা পার্টি। শুধু তাই নয়, বিগত কয়েক মাসে একের পর এক নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করার পাশাপাশি দলের ভিতর গোষ্ঠী কোন্দল চরমে। বিশেষত নতুন বনাম পুরনো দ্বন্দ্বে বেহাল পরিস্থিতি আর এর মাঝেই এবার শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে দল ছাড়লেন অসংখ্য বিজেপি নেতা কর্মীরা। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে তাদের তৃণমূলের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। যদিও এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত বিশেষ কোন মন্তব্য করেনি জেলা বিজেপি নেতৃত্ব কিংবা শুভেন্দু অধিকারী।
উল্লেখ্য, বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসে চলেছে। তবে এর মাঝেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুভেন্দুর গড়ে কুণাল ঘোষকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছে দল। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বিজেপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার মাধ্যমে দলত্যাগ বঙ্গ রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। একইসঙ্গে দলত্যাগ করা বিজেপি কর্মীদের দাবি, বর্তমানে চাকরি চোর বিজেপিতে রয়েছে, যা ঘিরে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
এদিন এ প্রসঙ্গে দলত্যাগ করা এক নেতা বটকৃষ্ণ দাস বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস নয় বরং বিজেপিতেই রয়েছে চাকরি চোরেরা। শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী এজেন্ট মেঘনাথ পাল চাকরি চোরেদের দলে এনেছে। আমাদের মতো পুরনোদের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই আমাদের এই সিদ্ধান্ত।”
পাশাপাশি গত বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম নির্বাচন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেন্দুর পরাস্ত করা প্রসঙ্গে ওই বিজেপি কর্মী বলেন, “নন্দীগ্রামে যে সকল বিজেপি কর্মীরা ছিল, তারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর একার কৃতিত্ব কখনো হতে পারে না। তবে আমি এখন বলতে চাই, পরবর্তী সময় আর কোনদিন নন্দীগ্রামের বুকে জয়লাভ করতে পারবেন না শুভেন্দু অধিকারী।”
তবে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেও এদিন দিলীপ ঘোষ প্রসঙ্গে সম্মানের সুরেই কথা বলতে শোনা গিয়েছে বটকৃষ্ণবাবুকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফের একবার প্রকাশ্যে এসে গেল বিজেপির অন্দরে নয়া বনাম পুরনো বিতর্ক। যদিও এই প্রসঙ্গে বিশেষ কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।