বাংলাহান্ট ডেস্ক : কোনও সুযোগেই শাসক দল কিংবা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েন না বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে একহাত নিলেন তিনি। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ভাবেন মমতা এহেন দাবিই এবার করতে শোনা গেল তাঁকে।
বঙ্গ সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দিনভর কর্মসূচির পর সুকনার একটি বেসরকারি হোটেলে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সারেন তিনি। সেখানেই নাকি রাজ্যের দুর্গাপুজোকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে একটি অনুষ্ঠান সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়। আজই।ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে হওয়ার কথা সেই অনুষ্ঠান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজ্যেরই দুর্গাপুজোর স্বীকৃতি অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করা হয়নি রাজ্য সরকারের কোনও প্রতিনিধিকেই। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবারই নয়া তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজোকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের পিছনে অবদান রয়েছে কলকাতার বিভিন্ন ক্লাব ও পুজো কমিটিগুলির। বাংলার কোটি-কোটি মানুষের অবদান রয়েছে। বাংলাকে এত দুর্বল ভাবার কারণ নেই। আজকে দশ বছর ধরে দুর্গাপুজোকে প্রমোট করতে করতে ইউনেস্কো এই পুজোকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছে। এতে অন্য কারও কোনও অবদান নেই।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবির প্রেক্ষিতেই খড়গহস্ত হয়ে মাঠে নামলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘কোনও রাজ্যের সুপারিশে তকমা দেয় না ইউনেস্কো। ভারত সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রকই বাঙালির দুর্গাপুজাকে হেরিটেজ ঘোষণা করার জন্য চিঠি পাঠায়। মমতা সব সময় ভাবেন, পশ্চিমবঙ্গ একটা আলাদা রাষ্ট্র। আর সেই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী তিনি। এই জন্যই বাংলাদেশের জয় বাংলা স্লোগান বলেন। কিন্তু ওঁর জেনে রাখা উচিত, ইউনেস্কোকে বা কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সরাসরি লিখতে পারেন না উনি। এটা বিদেশ নীতির পরিপন্থী। ভারত সরকার সুপারিশ করেছে। এতে ওঁর ক্রেডিট নেওয়ার কিছু নেই। কেন্দ্র সুপারিশ করেছে বলেই ইউনেস্কো হেরিটেজ তকমা দিয়েছে।’
একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘লোককে বিভ্রান্ত করারা চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। হেরিটেজ শব্দটার মানে আগে মুখ্যমন্ত্রীকে বুঝতে বলুন। ওই কার্নিভালের জন্য দুর্গাপুজাকে আলাদা করে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি সরাসরি চিঠি লিখেছেন? তা হলে সেই চিঠি দেখাতে বলুন ওঁকে। উনি কার্নিভাল করলেন আর ওখান থেকে ড্যাং ড্যাং করে নাচতে নাচতে হেরিটেজ তকমা দিয়ে দিল? এটা কি যাত্রাপালা নাকি?’ সব মিলিয়ে যে অমিত শাহের বঙ্গ সফরকে ঘিরে চড়ছে রাজনৈতিক বিরোধের পারদ তা বলাই বাহুল্য।