বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) দুর্নীতি এবং অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় বিজেপি (Bharatiya Janata Party)। পরবর্তীতে এই অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় গোটা বাংলা জুড়ে। পরবর্তীতে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’ মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক আরো বহুবনে বৃদ্ধি পায়। তবে বর্তমানে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হলো না সেই প্রসঙ্গ! ফলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, বিজেপির রিপোর্টে হঠাৎ কেন ব্রাত্য হলেন বিরোধী দলনেতা?
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি মামলায় কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। এ সকল ইস্যুকে সামনে এনে তাদের আরো বেকায়দায় ফেলতে সম্প্রতি নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় বিজেপি।
প্রসঙ্গত, নবান্ন অভিযানের শুরু থেকেই গোটা বাংলা জুড়ে বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কোথাও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, আবার একাধিক পুলিশ কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ পর্যন্ত ওঠে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, অপরদিকে বহু বিজেপি সমর্থকদের আটক করে রাজ্য পুলিশ। তবে পরবর্তী ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।
নবান্ন যাওয়ার পথে দ্বিতীয় হুগলী সেতুর কাছে বাধাপ্রাপ্ত হন বিরোধী দলনেতা। পরবর্তীতে শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের আটক করে পুলিশ। এক্ষেত্রে এক মহিলা পুলিশ কর্মী শুভেন্দু অধিকারীকে ধরতে এলে বিরোধী দলনেতা বলেন, “ডোন্ট টাচ মাই বডি। আমি পুরুষ আপনি মহিলা।” শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে উদ্দেশ্য করে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দেয় শাসক দল। উল্লেখ্য, এহেন উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পরেই কেন্দ্র বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে ৫ সদস্যের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তৈরি করা হয়; যারা গোটা বাংলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এদিন জেপি নাড্ডাকে রিপোর্ট দিয়েছে বলে খবর।
কি উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে? জানা যাচ্ছে, রিপোর্টে বলা হয়েছে, “নবান্ন অভিযানের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মদতেই পুলিশ সন্ত্রাস করেছে। পরবর্তীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য তারই প্রমাণ। ওই দিন ৫৫০ জনকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি ৭৫০ জন আহত হন এবং ৪৫ জন নিখোঁজ।” এক্ষেত্রে রিপোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তবে সকল ঘটনার উল্লেখ থাকলেও শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ কেন এড়িয়ে যাওয়া হল, তা নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট ধারণা মেলেনি।
এমনকি রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, সাঁতরাগাছিতে শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও ওই দিন সাঁতরাগাছিতে পৌঁছতেই পারেননি তারা! তবে বিজেপির রিপোর্টে ভুল তথ্য কেন পেশ করা হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন উঠে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিজেপির নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশের জায়গায় আমি থাকলে ওদের মাথায় গুলি করতাম।” তাঁর এই মন্তব্যকে উল্লেখ করেই সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। এক্ষেত্রে কেন্দ্র বিজেপি নেতৃত্বের আগামী পদক্ষেপ কি হয়, আপাতত সেটাই দেখার।