বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: কাতার বিশ্বকাপ মাঠের ভেতরে ইতিমধ্যে বেশ কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপহার দিয়েছে। মাঠের ভেতর গ্রুপ ফটো তোলার সময় জার্মান প্লেয়ারদের কাতারের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী নীতির বিরুদ্ধে অভিনব ভঙ্গিতে মুখে হাত চাপা দিয়ে দাঁড়ানো, ইরান বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচে দেশের নারীদের উদ্দেশ্যে পাশে থাকার বার্তা স্বরূপ জাতীয় সঙ্গীতে ইরানের ফুটবলারদের গলা না মেলানো তাদের নানান ঘটনা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে ফুটবলপ্রেমীদের।
আজ বৃহস্পতিবার এমন আরও একটি ঘটনা দেখা গেল কাতার বিশ্বকাপের মঞ্চে। কাতারের আল-জানুব স্টেডিয়ামে আজ মুখোমুখি হয়েছিল গ্রুপ জি-এর দুই দল সুইটজারল্যান্ড এবং ক্যামেরুন। এই খেলাটি সম্পর্কে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের যে বিশাল উৎসাহ ছিল এমন নয়। তবে অনেক ভারতীয় ফুটবলপ্রেমী চোখ রেখেছিলেন ম্যাচে কারণ তারা দেখে নিতে চাইছিলেন চুপো মোয়েটাংয়ের ক্যামেরুন আর জার্দান শাকিরির সুইটজারল্যান্ড পরবর্তীতে তাদের গ্রুপে থাকা ব্রাজিলকে কতটা বেগ দিতে পারে।
ম্যাচটির প্রথমার্ধে সুইটজারল্যান্ডকে বল রেখে খেলতে দিয়েছিল ক্যামেরুন। দুই দলেরই কিছু অসাধারণ ডিফেন্সিভ পারফরম্যান্স চোখে পড়ে প্রথমার্ধে। গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়েছিল প্রথমার্ধের খেলা। কিন্তু তারপর দ্বিতীয়ারদের খেলা শুরু হওয়ার মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে সুইটজারল্যান্ডের একটি দলগত ভাবে তৈরি করা অসাধারণ মুভ থেকে বেরোনো বল ধরে ডান উইং থেকে নিখুঁত ক্রস রাখেন সুইটসএজারল্যান্ডের তারকা ফুটবলার শাকিরি। সেই ক্রস থেকে অসাধারণ ফিনিশ করে সুইশদের এগিয়ে দেন ব্রিল এম্বোলো।
কিন্তু বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচ খেলে নিজের প্রথম গোল করে বিন্দুমাত্র উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়নি তাকে। কেন এমন নীরব ছিলেন তিনি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করে? আসলে এম্বোলোর জন্ম হয় সুইটজারল্যান্ড এর আজকের প্রতিপক্ষ ক্যামেরুনের মাটিতেই। ক্যামেরুনের এর রাজধানীতে তার জন্ম। মাত্র পাঁচ বছর যখন তার বয়স তখন তার মায়ের এবং বাবার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়। নিজের মায়ের সঙ্গে ফ্রান্সে চলে আসেন ছোট্ট এম্বোলো। ফ্রান্সের মাটিতেই এক সুইশ নাগরিকের সঙ্গে আলাপ হয় তার মায়ের। তার সঙ্গে বিবাহ করে ভবিষ্যতে পাকাপাকিভাবে সুইটজারল্যান্ড উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন এম্বোলোরা। তিনি ক্যামেরুনকে ছেড়ে চলে এলেও নিজের শিকড় কে ভুলতে পারেননি। তাই আজ নিজের জন্মভূমির ফুটবল দলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল করেও কোনও সেলিব্রেশন করেননি তিনি।