সৌতিক চক্রবর্তী,তারাপীঠ,বীরভূমঃ তারাপীঠের তারা মন্দির প্রাচীন বঙ্গ তথা রাঢ় বাংলার এক সাধন পীঠ বা সিদ্ধপীঠ। মতান্তরে আবার জাগ্রত শক্তিপীঠ এবং উপপীঠ। এখানে দেবী উগ্রতাঁরার শিলারূপ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। সেইজন্য তারাপীঠ ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় সাধন ক্ষেত্র ও তন্ত্রের অভীষ্ট স্থান। এখানে বামাক্ষ্যাপা কৌশিকী অমাবস্যার দিনে মা তারার আরাধনায় সিদ্ধি লাভ করেছিলেন।তাই এই পীঠকে ‘সিদ্ধিপীঠও’ বলা হয়। তাই প্রতি বছরের মতো এই বছরেও আগামী বৃহস্পতিবার সাড়ম্বরে তারাপীঠে পালিত হবে কৌশিকী অমাবস্যা। মন্দির কমিটির সদস্যদের আশা,এবছরেও এই কৌশিকী অমাবস্যায় কয়েক লক্ষ ভক্তদের সমাগম হবে এই সিদ্ধিপীঠে। এই বছর ১১ ভাদ্র (29 অগাস্ট, 2019) ও ১২ ভাদ্র (30 অগাস্ট) কৌশিকী অমাবস্যার তিথি পড়েছে। ইতিমধ্যেই তারাপীঠে পুলিশী টহলদারি শুরু হয়েছে। প্রস্তুতিও তুঙ্গে।
ছবিঃ দোকান সাজাতে ব্যস্ত ফুল ব্যবসায়ী।
তারাপীঠের মন্দির চত্বরে প্রায় ৩০০ বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে।এছাড়াও রাখা হবে অ্যাম্বুলেন্স,ডুবুরি,দমকল ইঞ্জিন ইত্যাদি। পুলিশ, দমকল, রেল পুলিশ, বিদ্যুৎ বিভাগ, জনস্বাস্থ্য কারিগরী বিভাগ, BDO, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, তারাপীঠ লজ মালিক সমিতি, তারাপীঠ মন্দির কমিটি এবং অন্যান্য আধিকারিকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে। এই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে,মূলত ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ, পানীয় জল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, স্যানিটেশন,অস্থায়ী শৌচালয় নির্মাণ ইত্যাদি জরুরি ব্যবস্থা নিয়ে।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কৌশিকী অমাবস্যায় পুণ্যার্থীদের বেশ ভিড় হয়। এবছরেও আরো অনেক বেশি ভিড় হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত অমাবস্যায় আমাদের এখানে এক পুণ্যার্থী স্নান করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনাটি মাথায় রেখেই এবার রাখা হবে ডুবুরি।
মায়ের পুজো দেওয়ার লাইনে বাঁশের ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেউ যদি অসুস্থ হয় তাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য থাকছে অ্যাম্বুলেন্স ও মেডিকেল ক্যাম্পের ব্যবস্থা৷ থাকছে,পর্যাপ্ত জল, আলো। তারাপীঠের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। কৌশিকী অমাবস্যার জন্য তারাপীঠে পুলিশ আধিকারিকরাও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। তারাপীঠে অটো,ট্রেকার, রিকশা চালক ও লজ মালিক সমিতিদের নিয়ে বিশেষ মিটিংও করা হয়েছে।”
ছবিঃ থাকছে মহিলা নিরাপত্তারক্ষী।
তারাপীঠে হোটেলের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুনীলবাবু বলেন,”গেষ্ট হাউসের মালিকদের দর্শনার্থীদের ঘর ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেকের পরিচয়পত্রের ফোটো কপি নেওয়ার নির্দেশ করে দেওয়া হয়েছে”
এছাড়াও জানা গেছে, যানজট এড়াতে আটলা মোড় ,মনসুবা মোড়, ইত্যাদি মোড়ে ও তারাপীঠ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় যানজট যাতে না হয় সেইজন্য যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে । ওইসব জায়গায় পুলিশ অফিসার সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে। এছাড়াও আরো সুবিধার জন্য অটো, ট্রেকার, রিকশার উপর লেখা থাকবে পুলিশ সহায়তা নম্বর।এককথায় বলা যেতে পারে কৌশিকী অমাবস্যার জন্য পুণ্যার্থীদের যেনো কোন অসুবিধা না হয় সেইজন্য নিরপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হবে তারাপীঠ চত্বর।