বাংলা হান্ট ডেস্ক: আজ মেঘালয় রাজ্যপাল তথাগত রায় বারাসতে RSS-এর এক প্রবীণ কার্যকর্তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন, সেখানে এসে তিনি মন্তব্য করে বলেন, “জিয়াগঞ্জের ঘটনা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ছাড়া আর কিছুই নয়! এবিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীশ ধনকড় ও চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেনের মন্তব্যের সঙ্গে আমি সহমত”৷ শুধু তাই নয় এদিন তথাগত সম্প্রতি জিয়াগঞ্জে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে শেখ মুজিবুরের ১৩ বছরের ছেলের নৃশংস খুনের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ও মন্তব্য করেন৷
মেঘালয় রাজ্যপাল বলেন, “যেভাবে বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী ও আট বছরের ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে, তার নিন্দা করার ভাষা আমার নেই”৷ শুধু তাই নয় কারণ নাম না করে এদিন তথাগত শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি, তিনি বলেন, “খুব আশ্চর্যজনক ভাবে যারা এই বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতি করছে, উল্টোদিকে তারাই আবার রাজনীতি করতে বারণ করছে৷ নিহত ব্যক্তি RSS কিংবা BJP-র সদস্য কি না সে প্রসঙ্গ আলাদা৷ কিন্তু প্রধান বিষয় হলো উনি একজন ভারতীয় নাগরিক৷ এবং তার পরিবারকে বীভৎস এবং নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে৷ আর এনিয়ে পুলিশের মধ্যেই ভিন্ন মত উঠে আসছে৷”
উল্লেখ্য, জিয়াগঞ্জে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানাল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে ভিএইচপি-র আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি আলোক কুমার বলেন, ”পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই। বিরোধীশূন্য করতে তাণ্ডব, লুঠ, ধর্ষণ ও হত্যালীলা চালানো হচ্ছে।”
রাজ্যে গত কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করে আসছে গেরুয়া শিবির। সেই দিকে ইঙ্গিত করে আলোক কুমার বলেন,”পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ব্যাপারে কেন ভাবছে না কেন্দ্রীয় সরকার! ভারতের সংবিধান বাঁচাকে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সময় এসে গিয়েছে।” কেরলের থেকেও বাংলার পরিস্থিতি খারাপ বলে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন অলোক কুমার। তাঁর কথায়, ”কেরলকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বাংলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে। আগামী নির্বাচনে মানুষ তৃণমূলকে জবাব দেবে।”
জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার বেলডাঙায় তিনি বলেন,”কার উপরে ভরসা করবে মানুষ? আইনশৃঙ্খলা বলে আর কিছু নেই। থাকলে তো উন্নতি অবনতি হয়!সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।” ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
তৃণমূলের দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে খুনকে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে অশান্তি ছড়াতে চাইছে বিজেপি ও আরএসএস। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,”উত্তরপ্রদেশে যে অরাজকতা চলছে, তা থেকে নজর ঘোরাতেই রাজ্যপালের এই মন্তব্য। মুর্শিদাবাদের ঘটনাটি একটি পারিবারিক ঘটনা। তা নিয়ে এত অপপ্রচার কেন? বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ধামাচাপা দিতেই রাজ্যপালকে আসরে নামানো হয়েছে।”