বাংলাহান্ট ডেস্ক: জাতীয় স্তরে বিজেপি-র কাজে একেবারেই খুশি নন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্রশেখর রাও (K Chandrasekhar Rao)। নিজের রাজ্যেও বিভিন্ন স্তরের নাগরিকদের জন্য চালু করেছেন একাধিক প্রক্কল্প। কৃষকদের আর্থিক সাহায্যের জন্য চালু করেছেন ‘ঋথু বন্ধু’ প্রকল্প। একইসঙ্গে দলিত গৃহস্থদের ব্যবসা শুরু করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের জন্য চালু করেছেন ‘দলিত বন্ধু’ প্রকল্প। এমন প্রকল্প গোটা দেশে কেন চালু করছে না বিজেপি, তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
চলতি বছরে ভারত পালন করেছে স্বাধীনতার ৭৫ বছর। এত বছরেও ভারতের প্রতিটি গ্রামে কেন বিদ্যুৎ পৌঁছলো না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ‘কেসিআর’। সে জন্য তিনি এবার কাজ করতে চান জাতীয় স্তরে। আগামীকাল অর্থাৎ বিজয়া দশমীর পূণ্য তিথিতে নিজের জাতীয় দলের নাম ঘোষণা করতে পারেন কে চন্দ্রশেখর রাও। পাশাপাশি, দলের জাতীয় স্তরের কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করতে পারেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।
কে চন্দ্রশেখর রাও-এর দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির দলীয় বৈঠক বসার কথা ৫অক্টোবর। ওই বৈঠকের পরই তেলঙ্গানা ভবনে দলের জাতীয় কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে বলে খবর। আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে টিআরএস-এর ভূমিকা কী হবে সেই পরিকল্পনাও স্পষ্ট করা হতে পারে। জাতীয় স্তরে দলের নাম পরিবর্তন করতে চান ‘কেসিআর’। সে জন্য টিআরএস-এর এক প্রতিনিধি দল দিল্লি গিয়ে দলের নাম পরিবর্তন করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে পারেন। আগামী ৯ অক্টোবর সেখানে একটি জনসভাও করতে পারেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।
জাতীয় স্তরে দলকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার বিষোয়ে টিআরএস নেতা শ্রীধর রেড্ডি বলেন, “সরকার চালাতে এনডিএ ব্যর্থ। দেশের জনগণ একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম চাইছে।” তিনি আরও বলেন, “মানুষের চোখে গুজরাট মডেল পুরোপুরি ব্যর্থ। তাই তাঁরা এখন একটি বিকল্প চাইছেন। সেই জন্যই কেসিআর খুব তাড়াতাড়িই জাতীয় দলের ব্যাপারে ঘোষণা করবেন।”
তবে টিআরএস-এর জাতীয় স্তরে দল ঘোষণার পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছে তেলঙ্গানার প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, এইভাবে জাতীয় স্তরে বিরোধীদের ভাগ করে বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছেন চন্দ্রশেখর। তেলঙ্গানা পিসিসি ক্যাম্পেন কমিটি চেয়ারম্যান মধু গৌড সাক্ষী বলেন, “জাতীয় দল হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের কোনও অর্থ নেই। তেলঙ্গানার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন তিনি। এবার গোটা দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা তাঁর লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “দিল্লি লিকার দুর্নীতিতে নিজের পরিবারের লোকেদের আড়াল করার জন্য নজর ঘোরানোর একটি আদর্শ কৌশল এটি। কেসিআর বিরোধীদের ভাগ করে বিজেপি-কে সুবিধা পাইয়ে দিতে চান। বিজেপি-মুক্ত ভারত গড়ার একমাত্র বিকল্প হল কংগ্রেস। সেই জন্য কেসিআর চাইলে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। যদিও রাজ্যস্তরে তাঁর দলের সঙ্গে কোনও জোট চাইছে না কংগ্রেস।”
তেলঙ্গানার বিজেপি নেতৃত্ব যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ নিয়ে কোনও সমালোচনা করেনি। বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ ডক্টর লক্ষ্মণ বলেন, “একটি গণতন্ত্রে যে কোনও রাজনৈতিক দল জাতীয় স্তর বা রাজ্য স্তরে লড়াই করতে পারে। সেটা তাদের ব্যাপার।”