বৃথা গেল অক্ষর ও হার্দিকের লড়াই, গ্রিন ও ওয়েডের দাপটে প্রথম T-20তে জয়ী অস্ট্রেলিয়া

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: এশিয়া কাপের পারফরম‍্যান্সের উন্নতি ঘটলো না ভারতীয় দলে। ২০৯ রানের লক্ষ্য দিয়েও তাদের অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হলো ৪ উইকেটে। ৪ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অজিরা। কিছু জায়গার চিন্তা কেটেছে এটা হয়তো মনে হতে পারে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর। যেমন লোকেশ রাহুলের পারফরম্যান্সে উন্নতি, সূর্যকুমার যাদবের ফর্মে ফেরা, হার্দিক পান্ডিয়া যে এখনো ভারতীয় দলের শ্রেষ্ঠ ফিনিশার তার প্রমাণ আরো একবার পাওয়া এবং রবীন্দ্র জাদেজার জায়গায় দলে আসা অক্ষর প্যাটেলের অসাধারণ বোলিং। কিন্তু চিন্তার বিষয়ের সংখ্যা হয়ে গেল এই ইতিবাচক বিষয় গুলির থেকে অনেক বেশি।

অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ফিঞ্চ দীর্ঘদিন ভারতের মাটিতে ক্রিকেট খেলেছেন। পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে তার ভালই ছিল। তিনি খুব ভালো করেই জানতেন যে দ্বিতীয় ইনিংসে যে দল বল করতে আসবে তাদের কিছুটা সমস্যা হবে শিশিরের কারণ। তাই ভালো ব্যাটিং উইকেট হওয়া সত্বেও টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক। ভারতীয় দলে আজকেও ফিরতে পারেননি যশপ্রীত বুমরা। তার জায়গায় উমেশ যাদবকে দলে নেওয়া হয়। মহম্মদ শামি কোভিড আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনি স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছিলেন। রিশভ পন্থকেও আজকের একাদশে জায়গা দেওয়া হয়নি। চোট সারিয়ে ফিরেছিলেন হর্ষল প্যাটেল।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যর্থ বিরাট ও রোহিত। দুর্দান্ত ব্যাটিং উইকেটে রোহিত শর্মা (১১) এবং বিরাট কোহলিকে (২) পাঁচ ওভারের মধ্যে হারিয়ে ফেলে ভারতীয় দল। তবে তাদের আউট হওয়ার কোনো প্রভাব পড়েনি লোকেশ রাহুলের ওপর। সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গী করে অজি বোলারদের আক্রমণ ফিরিয়ে দেন তিনি। ৩২ বলে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন এবং ৫৫ রান করে আউট হন। তার স্ট্রাইক রেট সংক্রান্ত যে সমালোচনা হয়েছিল তার কিছুটা জবাব দিয়েছেন আজ রাহুল। অপরদিকে এশিয়া কাপে অফ ফর্মের ধারা কাটিয়ে আজ ফর্মে ফিরেছেন সূর্যকুমার যাদবও। ৪৬ রানের অত্যন্ত আগ্রাসী একটি ইনিংস খেলেন তিনি। অল্পের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া হয়।

এরপর অত্যন্ত সুন্দর এবং আগ্রাসী একটি ইনিংস খেলেন হার্দিক পান্ডিয়া। সাতটি চার এবং পাঁচটি ছক্কা সহ তিনি মাত্র ৩০ বলে অপরাজিত ৭১ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলেন। ক্যামেরুন গ্রিনের শেষ ওভারের শেষ তিন বলে পরপর তিনটি ছক্কা মেরে দলকে দুশো রানের গণ্ডি পার করতে সাহায্য করেন হার্দিক। অজিদের হয়ে ৩টি উইকেট নেন ন্যাথান ইলেশ।

rahul hardik

কিন্তু রান তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ক্যামেরন গ্রিন এবং অ্যারন ফিঞ্চ। উমেশ যাদব ও ভুবনেশ্বর কুমারকে মারাত্মক আক্রমণ করেন তারা। দলগত ৩৯ রানের মাথায় ফিঞ্চ (২২) আউট হয়ে ফিরলেও তাতে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি রুদ্ধ হয়নি। ১০ ওভারের আগেই ১০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় অজিরা। এক দিকটা ধরে রেখেছিলেন স্টিভ স্মিথ এবং আগ্রাসী ব্যাট করছিলেন গ্রিন। দুর্দান্ত অর্ধশতরান অজি ওপেনার। এর মধ্যে ভারতীয় দল কিছু সহজ ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হয় যার জন্য ম্যাচে আরো জাঁকিয়ে বসে অজিরা। কিন্তু ১০৯ রানের দলগত স্কোরে গ্ৰিন (৬১) আউট হতেই ম্যাচে ফেরে ভারত। উমেশ যাদবের ওভারে পরপর কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান স্মিথ (৩৫) ও ম্যাক্সওয়েল (১)।

এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা ইঙ্গলিশকেও (১৭) ফিরিয়ে দেন অক্ষর প্যাটেল। ম্যাচে নিজের চার ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ৩ টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন অক্ষর। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেনি অন্য কোন ভারতীয় বোলার তার ওভার শেষ হতেই পাল্টা আক্রমণ করে ম্যাথু ওয়েড এবং টিম ডেভিড (১৮) ভারতের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ভুবনেশ্বর কুমার, হর্ষল প্যাটেলদের রীতিমতো ছেলেখেলা করেন ওয়েড (৪৫*)। ৪ বল বাকি থাকতেই চার মেরে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন কামিন্স। অক্ষর প্যাটেল বাদে বাকি প্রত্যেক ভারতীয় বোলার ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি করে রান বিলিয়েছেন। ডেথ বোলিং নিয়ে ভারতের চিন্তা আপাতত কাটলো না। বুমরার অভাবটা আজ একবার বোঝা গেল।

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর