বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভারতে (India) মানুষ সর্বদাই দেবদেবতার উপর ভরসা রাখেন। বিশ্বে মন্দির (Temple) নির্মানের অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপনে ভারত অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। ২০০১ সালের আদিম সুমারি অনুযায়ী ভারতে রয়েছে মোট ২০ লক্ষ মন্দির।
সময়ের নানা গণ্ডি পেরিয়েও ভারত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য স্থাপনে সচেষ্ট রয়েছে। এই সকল মন্দির ভক্তদের দানের ফলে বেশ প্রভাবশালীও হয়ে উঠেছে। অর্থের দিক থেকে পরিপূর্ণ ভারতের মন্দিরের অর্থভাণ্ডার। বিশ্বে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক বা কোন মহামারি, এই মন্দির কর্তৃপক্ষ সর্বদাই মানুষের সাহায্যের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধন সম্পদের দিক থেকে ভারতের প্রথম সারিতে থাকা প্রথম দশটি মন্দিরের বিষয়ে আলোচনা করা হল।
গুজরাটের সোমনাথ মন্দির (Shree Somnath Jyotirlinga Temple) রয়েছে এই তালিকায় দশম স্থানে। এই মন্দিরের ইতিসাহ থেকে জানা যায়, বহুবার বিদেশী শক্তি মন্দির ধ্বংস করতে চাইলেও, তা পুনরায় নির্মান করা হয়েছে। প্রতিদিনই প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের আগমনের ফলে, এই মন্দিরের অর্থ ভাণ্ডারে বছরে প্রায় ৩০-৩৫ কোটি টাকা জমা পড়ে।
নবম স্থানে থাকা মুম্বাইয়ের সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরের ২০০ বছর পুরোন গণেশ মূর্তির মুকুট তৈরি প্রায় ৪ কিলো সোনা দিয়ে। সাধারণ ভক্তের পাশাপাশি স্বনামধন্য ভক্তের ভিড়ও জমে এই মন্দিরে। অটুট সুরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত এই মন্দিরে বছরে প্রায় ১২৫-১৫০ কোটি টাকা দানবাক্সে জমা পড়ে।
৩ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত কেরলের সবরীমালা মন্দির রয়েছে আট নম্বরে। প্রতি বছরই এখানে বিপুল সংখ্যায় ভক্ত এসে জমা হওয়ার ফলে, ১৫ কিলো সোনা এবং ১৫০ মিলিয়ন দান জমা পড়ে মন্দিরের অর্থভাণ্ডারে।
সৌন্দর্য এবং আকর্ষণের দিক থেকে প্রথম সারিতে থাকা পাঞ্জাবের অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির (Sri Harmandir Sahib) রয়েছে ধনী মন্দিরের তালিকার সপ্তম স্থানে। শিখদের প্রধান ধর্মীয় স্থান হল এই মন্দির। তবে সৌন্দর্যের জৌলুসে ভরপুর এই মন্দিরের অর্থভাণ্ডার সম্বন্ধে এখনও বিশেষ কিছু জানা যায়নি।
ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির। সমুদ্রে ঘেরা এবং ঐতিহ্যে ভরপুর এই মন্দিরের ভেতরে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। প্রায় ২০৯ কিলো সোনা দিয়ে শুধুমাত্র জগন্নাথ দেবকে সাজানো হয়। রথের সময় অগণিত ভক্ত এসে এখানে ভিড় জমায়। বিপুল সংখ্যাক ভক্তের আগমনের ফলে এই মন্দিরে বছরে প্রায় ১৫০-২০০ কোটি টাকা দানবাক্সে জমা পড়ে।
বিশ্বের সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে সাই বাবার মাহাত্ম্য। এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে নাসিকের সিদ্ধির সাই মন্দির। এই মন্দিরে সাই বাবার বসার সিংহাসনটাই প্রায় ৯৪ কিলো সোনা দিয়ে তৈরি। দয়াবান এই সাই বাবার ট্রাস্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮০০ কোটি টাকা এবং ৩৮০ কিলো সোনা ছাড়াও রয়েছে দেশ বিদেশের বহু মূল্যবান রত্ন। প্রায় ৩২০ কোটি টাকা বছরে এই মন্দিরের অর্থভাণ্ডারে জমা পড়ে।
জমি থেকে ৫২০০ ফুট উঁচুতে লক্ষ বছর আগে গুহার মধ্যে নির্মিত জম্মুর শ্রী বৈষ্ণদেবী মন্দির রয়েছে এই তালিকার চতুর্থ স্থানে। বহু পৌরাণিক ইতিহাসের সাক্ষী এই মন্দিরে বছরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দান আসে।
এই তালিকার তিন নম্বরে রয়েছে কেরালার গুরুভরিয়াপ্পান মন্দির। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই মন্দিরে নাকি এমন চৌম্বক শক্তি রয়েছে, যার দ্বারা মানুষের মন শান্ত হয়ে যায়। প্রতি বছর প্রায় ২৫০ কোটি টাকা এই মন্দিরের অর্থভাণ্ডারে জমা পড়ে।
ধনী মন্দিরের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বালাজির মন্দির। শ্রী ভেক্টেশ্বর স্বামী এই তিরুপতি বালাজির মন্দির অর্থাৎ ভগবান বিষ্ণুর বিচরণ স্থানে প্রতিদিন অগণিত ভক্তের সমাগমের ফলে বছরে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা কোষাগারে জমা পড়ে।
ভারতের ধনী মন্দিরের তালিকার একেবারে শীর্ষে রয়েছে কেরালার পদ্মানাবাস্বামী মন্দির (Sree Padmanabhaswamy Temple)। সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের দিক থেকে প্রসিদ্ধ এই মন্দির ভারত তথা বিশ্বের এক নম্বর ধনী মন্দির। এই মন্দিররে শুধুমাত্র মহাবিষ্ণুর মূর্তিই প্রায় ৫০০ কোটি টাকার চেয়েও বেশি দামী।