৭১ জনের মৃত্যু, ১৮৫ আহত! ১৩০০ জনের সাক্ষীর পরেও মুক্ত জয়পুর ব্লাস্টের দোষীরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : গত বুধবার ২০০৮ সালের জয়পুর বোমা বিস্ফোরণের (Jaipur Bomb Blast) ঘটনায় ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করল রাজস্থান হাইকোর্ট (Rajasthan High Court)। মর্মান্তিক ওই বিস্ফোরণে মোট ৭১ জনের প্রাণ যায়। ঘটনায় আহত হন ১৮৫ জন। মুক্তিপ্রাপ্ত চার ব্যক্তির আইনজীবী সৈয়দ সাদাত আলি সংবাদমাধ্যম কে জানান, আদালত রাজস্থান পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছে ‘অদক্ষ’ তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।

এর আগে ২০১৯ সালে, জয়পুরের এক বিশেষ আদালত বিস্ফোরণের জন্য চার জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। আর, শাহবাজ হুসেন নামে পঞ্চম জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছিল। শাহবাজের মুক্তি হাইকোর্টেও বহাল রয়েছে। প্রসঙ্গত আজ থেকে ১৫ বছর আগে ১৩ মে, এক ধারাবাহিক বিস্ফোরণে পুরানো প্রাচীর ঘেরা শহর জয়পুর কেঁপে উঠেছিল।

আরডিএক্স ব্যবহার করে নয়টি বোমা ফাটানো হয়েছিল জয়পুর শহরে। জনবহুল জয়পুরের পুরানো শহরের আটটি স্থানে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ থেকে ৭টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে পরপর বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এই বিস্ফোরণগুলো এতটাই পরিকল্পিত ছিল যে একটি বিস্ফোরণস্থল থেকে পালিয়ে আসা লোকজন অপর বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। আর, তারপর সেখানেও বিস্ফোরণ ঘটেছে। তার মধ্যে কিছু বিস্ফোরক আবার সাইকেলের সঙ্গে বাঁধা ছিল। তার ওপর পুলিস না-ফাটা বেশ কয়েকটি বোমা শনাক্ত করে নিষ্ক্রিয় করেছিল।

jaipur 2

বিস্ফোরণের একদিন পর, জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, একটি গণমাধ্যমের অফিসে ইমেল পাঠিয়ে হামলার দায় স্বীকার করে। ইমেলে তারা বিস্ফোরকভর্তি একটি সাইকেলের ভিডিও পাঠায়। যা দেখে পুলিস নিশ্চিত করে যে সাইকেলটির সিরিয়াল নম্বর বিস্ফোরণে ব্যবহৃত একটি সাইকেলের সঙ্গে মিলেছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জানায় ইমেলটি আসল।

তবে সংস্থাগুলোর সন্দেহ ছিল, তদন্তকে বিভ্রান্ত করতেও এই ইমেল পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। ওই ইমেলে দাবি করা হয় জয়পুরের পর্যটন শিল্পকে লাইনচ্যুত করতেই এমন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পাশাপাশি, এই বিস্ফোরণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করার বিরুদ্ধে ভারতকে সতর্কও করা হয়েছিল। বিস্ফোরণের পর জয়পুরে পর্যটন সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শুধু তাই নয়, সেই সময়ে সদ্য জন্ম নেওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে বিদেশি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের ওপরও এই বিস্ফোরণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া প্রথম ব্যক্তির নাম ছিল শাহবাজ হুসেন। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২০০৮ সালের আগস্টে। তার বিরুদ্ধে এই হামলার দায় স্বীকার করে ইমেল পাঠানোর অভিযোগ আনা হয়।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর