বাংলা হান্ট ডেস্ক: দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি, বিয়েও করেন তাঁকে। এমতাবস্থায়, গত জুলাই মাসে এই বিয়ের কথা সবাই জানতে পেরে যান। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও (Social Media)। স্বাভাবিকভাবেই, তীব্র আলোচনা শুরু হয় এই সম্পর্ককে ঘিরে। কিন্তু, হঠাৎই ঘটল ছন্দপতন। রবিবার সকালে উদ্ধার হল ওই অধ্যাপিকার দেহ।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নাটোরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই অধ্যাপিকার মৃতদেহ। তিনি খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপিকা ছিলেন। তাঁর নাম খাইরুন নাহার। প্রায় ৮ মাস আগে নাটোর এন এস সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মামুনকে বিবাহ করেন তিনি। মূলত, গত বছর জুন মাস নাগাদ ফেসবুকসূত্রে পরিচয় হয় তাঁদের।
সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। এমতাবস্থায়, প্রেমকে পরিণতি দিতে গত বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ বিবাহ করেন তাঁরা। যদিও, কয়েকদিন আগেই তাঁদের বিবাহের খবর ছড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে, তাঁদের এই বিয়ের কথা জানাজানি হতেই মামুনের পরিবার বিষয়টি মেনে নিলেও ওই অধ্যাপিকার পরিবার কিছুতেই এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি।
এদিকে জানা গিয়েছে, এর আগেও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন খাইরুন নাহার। এমনকি, তাঁর এক সন্তানও রয়েছে। যদিও, পারিবারিক বিবাদজনিত কারণে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এমতাবস্থায়, একাকীত্বে ভুগছিলেন ওই অধ্যাপিকা। আর ঠিক সেই সময়েই ফেসবুক মারফত তাঁর পরিচয় হয় ২২ বছরের ওই কলেজ পড়ুয়ার সঙ্গে। যদিও, পরবর্তীকালে তাঁদের বিয়ে নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হলে খাইরুন জানিয়েছিলেন যে, প্রথম বিবাহের বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন তিনি। এমনকি, তিনি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন বলেও জানান।
এমতাবস্থায়, তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মামুন। পাশাপাশি, তাঁর খারাপ সময়ে তাঁকে শক্তি এবং উৎসাহ দিয়ে নতুনভাবে পথ চলার স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন মামুন। এছাড়াও, তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একইসাথে জীবন কাটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই সম্পর্কে হঠাৎ পড়ল ছেদ। এদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, অনেকে মনে করেছেন যে, বিয়ের পর যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁকে সমালোচিত হতে হয় তা মেনে নিতে পারেননি ওই অধ্যাপিকা। সেই কারণেই হয়ত নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মূলত, এই বিয়ে নিয়ে কয়েকদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়াতে একাধিক আলোচনা এবং সমালোচনা হয়। সেই কারণে মানসিক চাপের বশবর্তী হয়ে ওই অধ্যাপিকা আত্মহত্যা করেছেন কি না আমরা তা তদন্ত করছি।“ জানিয়ে রাখি, পুলিশ ইতিমধ্যেই খাইরুন নাহারের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। সেই সঙ্গে মামুনকেও আটক করা হয়েছে বলে জানান নাটোর থানার ওসি মো. নাছির উদ্দিন।