বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভাগ্যের একি পরিহাস। অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন। নাকতলায় নিজস্ব বিরাট বাড়ি। রাজ্যের দীর্ঘদিনের মন্ত্রী (State Minister)। তৃণমূলের মহাসচিব। কিন্তু সব কেমন ওলট-পালট হয়ে গেল কয়েক দিনেই। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় (SSC Scam) গ্রেফতার করেছে ইডি (ED)। প্রেসিডেন্সি জেলের সেলেই দিন কাটছে বাংলার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর।
রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সেলের বাইরে রবিবারই বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। তবে জানা যাচ্ছে কারাবাসের জীবনে কিছুটা অভ্যস্ত হয়ে গেছেন পার্থ। শনিবার রাতে বেশ ভাল ঘুমও হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। এদিন নাকি ভাল করে স্নানও সেরেছেন তিনি।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সকাল-সন্ধ্যা থালা নিয়ে নিজের হাতেই সেলের গেট থেকে খাবার নিচ্ছেন পার্থ। মাঝেমধ্যেই বায়না করেছেন ভাতের জন্য। তিনি ডায়াবেটিক রুগী। তাই ভাতের আবদার মেটানো হলেও, থালায় ভাত দেওয়া হচ্ছে খুবই সামান্য। রাতেও ভাতই খেয়েছেন তিনি। তবে সবটাতেই নিয়মের বড্ড কড়াকড়ি বলেও খুঁতখুঁত করছেন তিনি।
নিয়ম করে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৬টা ৪৫-এর মধ্যে আসে চা-বিস্কুট। সকাল ৮টা নাগাদ আসে প্রাতরাশ। প্রাতরাশের মেনু হয় চিড়ে, নয় মুড়ি, কখনও ছাতু কিংবা পাউরুটি। সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে আসে দুপুরের খাবার, ভাত-সবজি। সুস্বাদু মশালাদার খাবার ছেড়ে, এখন এসবই খেতে হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বিকেলে একটার সময় টিফিন আসে। সন্ধে ৭টা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে চলে আসে রাতের খাবার। খাওয়া হলে নিজের বাসন নিজেকেই ধুয়ে রাখতে হয় সংশোধনাগারের অন্য আবাসিকদের মতোই।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের বিশ-বাইশ নম্বর ওয়ার্ডের সেল নম্বর টু-ই এখন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নতুন ঠিকানা। প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদাও তিনি পাচ্ছেন না। সেলের মধ্যে নেই তেমন আলোর ব্যাবস্থাও। বন্দিবাসে সময় কাটছে না একেবারেই। কখনও খবরের কাগজ পড়ছেন। কখনও বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। নিরাপত্তার কারণে এখনও সেলের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি পাননি পার্থ।
তাঁর সেলের বাইরে সব সময় পাহারা দিচ্ছেন দু’জন নিরাপত্তাকর্মী। ঘণ্টা দুয়েক অন্তর জেলের কোনও না কোনও আধিকারিকও এসে দেখে যাচ্ছেন তাঁকে। ক্ষমতায় থেকে তা ভোগ করা আর ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্যটা ঠিক কী তা হাড়ে-হাড়ে টের পাচ্ছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।