বাংলা হান্ট ডেস্ক : সরকারের তরফ থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হলেও মালদায় (Malda) নাবালিকা মায়ের মৃত্যুর (Minor Pregnancy Death) হার কমছেনা। ক্রমশ বেড়েই চলেছে নাবালিকা মায়েদের মৃত্যুর হার। স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসনও। সমীক্ষা বলছে, এখনই কোনও বড় পদক্ষেপ না নিলেই অদূর ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনা ঘটাও অসম্ভব নয়।
মালদা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষা অনুযায়ী, নাবালিকা মায়ের মৃত্যুর হার যেমন বাড়ছে তেমন বাড়ছে নাবালিকা গর্ভবতীর সংখ্যাও। এত প্রচেষ্টার পরেও নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হচ্ছেনা প্রশাসন। সমীক্ষা বলছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে মালদা জেলায় নাবালিকা মায়ের মৃত্যুর হার ছিল মোট মৃত্যুর ২৩.৬১ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষে সেই পরিসংখ্যান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭.১৪ শতাংশে।
বছরের শুরুতেই যদি এই হাল হয় তাহলে বছরভর এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে তা ভেবেই চিন্তায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এইদিন এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘শেষ যে সার্ভে হয়েছিল তাতে মালদা জেলায় গর্ভবতীদের মধ্যে প্রায় ২১ শতাংশ নাবালিকা ছিল ৷ বর্তমানে সেই হার অবশ্য ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে ৷ কিন্তু এই পরিসংখ্যানও যথেষ্ট চিন্তার।’
আরও পড়ুন : দেব, মিমি, নুসরত অতীত! এবার তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন বাংলার নম্বর ওয়ান ‘নায়িকা’, মুখ খুললেন খোদ অভিনেত্রী
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মালদায় মেয়েদের বয়স ১৫ পার হলেই বাড়ির লোক তড়িঘড়ি বিয়ে নিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী গর্ভবতী মেয়েদের মৃত্যুর হার যথেষ্ট উদ্বেগজনক। তবে মৃত্যুর হার আর আরও বেশি ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে। এই হার প্রায় ৩৫ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহ কীভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন।
আরও পড়ুন : সরকারি মঞ্চে মমতাকে মা দূর্গার সাথে তুলনা! খোদ জেলাশাসকের মন্তব্যে তুঙ্গে বিতর্ক
তবে কি রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ সমস্ত প্রকল্পই বৃথা? সমীক্ষা বলছে, সরকারি প্রকল্পের ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহারই যেন বেশি হচ্ছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা নিয়ে মানুষ মেয়েদের পড়ানোর জায়গায় সেই টাকা বিয়ের কাজে লাগানো হচ্ছে। ঘটনাপ্রসঙ্গে মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান সত্যিই ভীষণ উদ্বেগজনক ৷ প্রশাসনের তরফে বাল্যবিবাহ রোধে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে ৷ কোথাও নাবালিকা বিয়ের খবর জানা গেলে প্রশাসন ও পুলিশ তৎপরতার সঙ্গে তা বন্ধ করছে।’