বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছরে ৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে পদ্ম পুরস্কার (Padma Awards 2023) প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার মোট ১০৬ জনকে পদ্ম পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৬ টি পদ্মবিভূষণ, ৯ টি পদ্মভূষণ এবং ৯১ টি পদ্মশ্রী পুরস্কার। এমতাবস্থায়, পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) জবলপুরের বর্ষীয়ান চিকিৎসক ডাঃ (ক্যাপ্টেন) মুনিশ্বর চন্দ্র দাওয়ারও। তিনি মাত্র ২০ টাকায় রোগীদের চিকিৎসা করেন। গত ৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়।
এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া টুডে-র একটি রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ডাঃ দাওয়ার ১৯৪৬ সালের ১৬ জানুয়ারি, পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন। দেশভাগের পর তাঁর পরিবার ভারতে চলে আসে। তিনি জবলপুর থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর সেনাবাহিনীতে ভর্তির পরীক্ষাও দেন। ৫৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে সেখানে মাত্র ২৩ জন নির্বাচিত হয়েছিলেন। যাঁদের মধ্যে ডাঃ দাওয়ার নবম স্থান অর্জন করেন।
১৯৭১-এর যুদ্ধে আহতদের চিকিৎসা করেন: ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশে তাঁর প্রথম পোস্টিং পান। সেই সময়ে যুদ্ধে আহত বহু সৈনিকের চিকিৎসা করেন ডাঃ দাওয়ার। যুদ্ধের পরে, তাঁর স্বাস্থ্যজনিত কিছু সমস্যার কারণে তিনি অবসর নেন। জানা গিয়েছে, ১৯৭২ সাল থেকে তিনি জবলপুরে রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেন।
মাত্র ২০ টাকায় চিকিৎসা করেন তিনি: ডাঃ দাওয়ার মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তাঁর ফি এটাই ছিল। তারপরে তিনি ৩ টাকা নিতে শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে, তাঁর ফি বেড়ে হয় ৫ টাকা। ২০১২ সালে তিনি ১০ টাকা করে নিতে শুরু করেন। এমতাবস্থায়, ২০২১ সালে, তিনি তাঁর ফি বাড়িয়ে ২০ টাকা করেছেন এবং ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি সত্বেও, আজও তাঁর ফি ২০ টাকাই রয়েছে।
দরিদ্রদের সেবা করাই উদ্দেশ্য: এই প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান চিকিৎসক জানিয়েছেন, এত কম পারিশ্রমিক নেওয়ার কারণে পরিবারের সদস্যরা প্রশ্ন তুললেও কেউ কখনও বাধা দেয়নি। ANI-এর সাথে কথা বলার সময়ে তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য দরিদ্রদের সেবা করা এবং সেই কারণেই ফি বাড়ানো হয়নি। সাফল্যের একটাই মন্ত্র, ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে থাকুন, একদিন অবশ্যই সফলতা পাবেন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রোগীদের চিকিৎসা করছেন ডাঃ দাওয়ার। তাঁর ক্লিনিক সপ্তাহে ৬ দিন খোলা থাকে এবং দূর-দূরান্ত থেকে প্রায় ২০০ জন রোগী প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য তাঁর কাছে আসেন।