বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের রাজ্য তথা দেশের গণপরিবহণের ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল রেলপথ (Indian Railways)। প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ মানুষ রেলপথের ওপর ভরসা রেখেই পৌঁছে যান নিজেদের গন্তব্যে। এমতাবস্থায়, কখনও ভেবে দেখেছেন যে, আমাদের রাজ্যে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) প্রথম ট্রেন কোথায় চলেছিল? অনেকেই কাছেই এই প্রশ্নের উত্তর অজানা। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।
মূলত, রাজ্যে প্রথম ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৫৪ সালের ১৫ অগাস্ট। তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলের অধীনে হাওড়া থেকে হুগলির মধ্যে শুরু হয় এই ট্রেনের সফর। জানা যায় যে, হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত মোট ২৩ মাইলের দূরত্ব অতিক্রম করতে ওই ট্রেনটির সময় লেগেছিল ১ ঘণ্টা ৩১ মিনিট। তবে, এই পরিষেবার ট্রায়াল রান হয়েছিল তার কিছুদিন আগেই।
১৮৫৪ সালের ১১ অগাস্ট সম্পন্ন হওয়া ওই ট্রায়াল রানে ট্রেনটিকে অতিক্রান্ত করতে হয়েছিল তিনটি স্টেশন। সেগুলি হল বালি, শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর। আর সফলভাবে ট্রায়াল রান সম্পন্ন হওয়ার পরেই ১৫ অগাস্ট শুরু হয়েছিল এই ট্রেনের প্রথম সফর। এদিকে, এই ট্রায়াল রান সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করে বিস্তারিত তথ্য সামনে এনেছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল। যেখানে বলা হয়, সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছেড়ে ট্রেনটি চুঁচুড়ায় পৌঁছেছিল সকাল ১১ টা ১ মিনিটে। উল্লেখ্য যে, সেইসময়ে চুঁচুড়া স্টেশনকে হুগলি স্টেশন হিসেবে দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: Indian Railways: মাত্র দুই অক্ষর, ভারতের সবথেকে ছোট নামের রেল স্টেশন হল এটি! রয়েছে প্রতিবেশী রাজ্যে
এদিকে, ওই ট্রেনটির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬.৩২ মাইল। এমতাবস্থায়, হাওড়া থেকে বালি পর্যন্ত ৫.৫ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করতে ট্রেনটির সময় লেগেছিল ১১ মিনিট। পাশাপাশি বালি থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত ৬.৫ মাইল দূরত্ব সফর করতে ট্রেনটি সময় নেয় ১৪ মিনিট। এরপর শ্রীরামপুর থেকে চন্দননগর (দূরত্ব ৮.৫ মাইল) যেতে সময় লাগে ২০ মিনিট। এদিকে, চন্দননগর থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত ৩ মাইল দূরত্বের ক্ষেত্রে ট্রেনটির ৮ মিনিট সময় লেগেছিল।
তবে, এই রেল সফরের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ছিলেন তৎকালীন চিফ লোকোমেটিভ সুপারিটেনডেন্ট মিস্টার হজসন। তিনি জানিয়েছিলেন কয়েকদিন পরেই আরও উন্নত হবে এই যাত্রাপথ। এছাড়াও, ওই ট্রেনটিতে পর্যাপ্ত জায়গা এবং সামগ্রিক যাত্রা খুবই আরামদায়ক ছিল বলেও জানা গিয়েছে।