বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময়ের সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত সমগ্ৰ বিশ্বে জনসংখ্যা সাত বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। যদিও, পৃথিবীতে খাদ্য উৎপাদনের পরিমান থেকে গিয়েছে নির্দিষ্ট হারেই। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞানীরা এক ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁরা দাবি করেছেন যে, আসন্ন ২৭ বছরের মধ্যে মানুষের খাদ্যের ভান্ডার ফুরিয়ে যাবে।
এমনকি, বিজ্ঞানীরা এই প্রসঙ্গে একটা সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০২২-এর ২৪ এপ্রিল থেকে মানুষের কাছে আর মাত্র ২৭ বছর ২৫১ দিনের খাদ্যের পরিমান থাকবে। এছাড়াও, বিজ্ঞানীদের মতে, ২০৫০ সাল নাগাদ মানুষের জন্য খাদ্যের জোগান আর কোনোভাবেই অবশিষ্ট থাকবে না। এর পাশাপাশি, তাঁরা আশঙ্কা করছেন যে, খাদ্য ও জলের সঙ্কট একটা সময়ে পরবর্তী বিশ্বযুদ্ধের কারণও হয়ে দাঁড়াবে।
এই প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানী এডওয়ার্ড উইলসন জানিয়েছেন যে, এই সঙ্কট মেটাতে পৃথিবীর মতো দু’টি গ্রহের প্রয়োজন যা বর্তমানের চাহিদা মেটাতে পারে। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর জন্য বর্তমানে মানুষের খাদ্য সরবরাহের ক্ষমতা সীমিত।
নিরামিষ খেতে অভ্যাস করুন:
এডওয়ার্ড উইলসন জানিয়েছেন, সবাই নিরামিষভোজী হয়ে উঠলে পৃথিবীর মানুষের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে। তিনি এর কারণ হিসেবে বলেছেন, মাংস পেতে হলে আরও খাবারের প্রয়োজন হয়। এদিকে, আগামীতে বিশ্বের জনসংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তা সম্ভব নয়।
এই প্রসঙ্গে তিনি পরিসংখ্যানের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ১০ বিলিয়ন। যার ফলে সকলের খাদ্যের জন্য ২০১৭ সালের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি খাদ্যের প্রয়োজন। এদিকে, পৃথিবী ১০ বিলিয়ন মানুষের জন্যই খাদ্য সরবরাহ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের ব্যবহারও বাড়ছে। এই মুহূর্তে খাদ্য গ্রহণের হার এবং পৃথিবীর উৎপাদিত খাদ্যের পরিমান নিয়ে গবেষণা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানেই বলা হয়েছে, ৮ হাজার বছর ধরে পৃথিবীতে যত খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে তার চেয়েও বেশি পরিমান খাদ্য আসন্ন ৪০ বছরে প্রয়োজন হবে।
এদিকে, উইলসন জানিয়েছেন, “সবাই যে নিরামিষভোজী হয়ে উঠবে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। মানুষ প্রতিদিন বেশি করে খাবার খাচ্ছে এবং নষ্ট করছে।” তবে, তিনি মনে করেছেন, মানুষ যদি মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়, তাহলে পৃথিবী সহজেই খাবার পেতে পারে।
তাঁর মতে, মাংসে খাদ্য ও শক্তি বেশি খরচ হয়। উদাহরণস্বরূপ, তিনি জানিয়েছেন যে, একটি ভুট্টা পাওয়ার চেয়ে মাংস পেতে ৭৫ গুণ বেশি শক্তি লাগবে। এদিকে, অন্যান্য বিজ্ঞানীরাও এডওয়ার্ডের সতর্কবার্তার সাথে একমত হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক জুলিয়ান ক্রিব বলেছেন, “বিশ্বের খাদ্যের জন্য একটি বড় সঙ্কট আসতে চলেছে। আমাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় নেই।” এমনকি, ভবিষ্যতে খাদ্য ও জলের জন্য বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি।