অনন্য নিদর্শন! সবচেয়ে বড় মন্দির তৈরিতে আড়াই কোটি টাকার জমি দান করল মুসলিম পরিবার

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে যখন বারবার বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ঘটনা ঘটছে ঠিক সেই আবহেই এক অনন্য দৃষ্টান্তের সাক্ষী থাকল বিহার। সমস্ত ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে এক অভিনব সম্প্রীতির মেলবন্ধন প্রদর্শিত হল মন্দির স্থাপনকে ঘিরে।

সূত্র অনুযায়ী, বিহারের একটি মুসলিম পরিবার পূর্ব চম্পারন জেলার কাইথওয়ালিয়া এলাকায় বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির নির্মানের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের জমি দান করেছে। আর এই ঘটনাতেই অভিভূত সকলে।

এই প্রসঙ্গে পাটনায় অবস্থিত মহাবীর মন্দির ট্রাস্টের প্রধান আচার্য কিশোর কুণাল গত সোমবার জানিয়েছিলেন যে, জমিটি গুয়াহাটিতে বসবাসকারী পূর্ব চম্পারনের ব্যবসায়ী ইশতিয়াক আহমেদ খান দান করেছেন। এছাড়াও, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার কুণাল বলেছেন, “সম্প্রতি পূর্ব চম্পারণের কেসারিয়া মহকুমার রেজিস্ট্রি অফিসে মন্দির নির্মাণের জন্য ওই পরিবারের জমি দান সংক্রান্ত সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।”

পাশাপাশি, কিশোর কুণাল আরও জানান, ইশতিয়াক আহমেদ খান ও তাঁর পরিবারের এই অনুদান দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের একটি বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে। এছাড়াও, মুসলমানদের সাহায্য ছাড়া এই বৃহৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা কঠিন ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, এই প্রসঙ্গে ইশতিয়াক আহমেদ খান জানিয়েছেন, “যে ধরনের মন্দির তৈরি হচ্ছে তা পুরো এলাকার একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করবে। তাই আমরা ভেবেছিলাম, যে ধর্মই হোক না কেন, ধর্মের কাজে যেন কোনো বাধা না আসে। এমতাবস্থায়, আমরা বিনামূল্যে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি একজন সাধারণ কৃষক এবং আমি রাজনীতি করি না। আমি কেবল খুশি যে আমার এলাকায় একটি বিশাল মন্দির তৈরি হচ্ছে, যেখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ পৌঁছবে এবং আমার এলাকার নাম হবে।”

জানা গিয়েছে, এই পর্যন্ত মহাবীর মন্দির ট্রাস্ট এই বৃহৎ মন্দির নির্মাণের জন্য ১২৫ একর জমি পেয়েছে। পাশাপাশি, ট্রাস্ট শীঘ্রই ওই এলাকায় আরও ২৫ একর জমি পাবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই বিরাট রামায়ণ মন্দিরটি দ্বাদশ শতাব্দীতে তৈরি হওয়া কম্বোডিয়ার বিশ্ব বিখ্যাত আঙ্কোরভাটের পরিসরের চেয়েও উঁচু হবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, পূর্ব চম্পারণের এই মন্দিরে উঁচু চূড়া সহ ১৮ টি মন্দির থাকবে এবং এর শিব মন্দিরে বিশ্বের বৃহত্তম শিবলিঙ্গ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। সমগ্ৰ প্রকল্পটির মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকা। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রাস্ট শীঘ্রই নয়াদিল্লিতে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণে নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবে।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X