বাংলাদেশে ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন! দেশজুড়ে শুরু কারফিউ, মৃতের সংখ্যা শতাধিক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি। গত শুক্রবার বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ ও নিরাপত্তা আধিকারিকরা গুলি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এমতাবস্থায়, ওই দেশজুড়ে চলমান হিংসাত্মক ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০৫ জনেরও বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশজনই পড়ুয়া। এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নরসিংদী জেলার একটি কারাগারে হামলা চালিয়ে সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার আগে শতাধিক বন্দিকে মুক্ত করে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে (Bangladesh) কারফিউ ঘোষণার নির্দেশ জারি করে এবং সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। ওই দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংশোধনের দাবিতে বহু দিন ধরেই বিক্ষোভ করছিল।

বাংলাদেশে (Bangladesh) ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে পরিস্থিতি:

এমতাবস্থায়, রাজধানী ঢাকাসহ আরও কয়েকটি স্থানে কয়েক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরু হলেও গত সোমবার থেকে তা চরম আকার ধারণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বর্ডার গার্ড অফিসাররা এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীর ভিড়ের ওপর গুলি চালায়। এই আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশ (Bangladesh) টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয়ের বাইরে জড়ো হয়েছিল। তারা একদিন আগে সদর দফতরে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেছেন যে তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে এবং সারাদেশের মসজিদে নিহতদের জন্য জানাজা নামাজের আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত জানুয়ারিতে টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এই বিক্ষোভই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

   

গুলি ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায় রাস্তায়: সীমান্তরক্ষীরা ভিড়ের ওপর গুলি ছুঁড়েছে। অপরদিকে, পুলিশ অফিসাররা কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় গুলি এবং রক্তের দাগ। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ (Bangladesh) টেলিভিশনের একজন সংবাদ প্রযোজক ও সাংবাদিক জানান, বিক্ষোভকারীরা প্রধান দরজা ভেঙে যানবাহণ ও অভ্যর্থনা কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি বলেন, “আমি প্রাচীরের ওপর দিয়ে লাফ দিয়ে পালিয়ে যাই। কিন্তু আমার কয়েকজন বন্ধু ভেতরে আটকা পড়ে।” স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই সপ্তাহের শুরুতে ৬ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

The protest is becoming terrible in Bangladesh.

কেন তৈরি হল এই পরিস্থিতি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা যোদ্ধাদের আত্মীয়দের জন্য সরকারি সেক্টরের চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঢাকা এবং অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছে। তারা যুক্তি দিচ্ছে যে, ওই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থকদের সেটি সুবিধা দেয়। কারণ, আওয়ামী লীগ দল মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল। একইসঙ্গে হাসিনা এই কোটা ব্যবস্থার স্বপক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: হবেনা কোনও পরীক্ষা! পশ্চিমবঙ্গের এই কেন্দ্রীয় সংস্থায় হচ্ছে কর্মী নিয়োগ, কিভাবে করবেন আবেদন?

ভারত দু’টি ট্রেন বাতিল করেছে: ভারতীয় রেলের তরফে শনিবার কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং রবিবার কলকাতা-খুলনার মধ্যে বন্ধন এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। রেলের এক আধিকারিক এই তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশের (Bnagladesh) হিংসাত্মক বিক্ষোভের মাঝেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: গম্ভীরের “কৃপায়” টিম ইন্ডিয়ায় এন্ট্রি মিলল KKR-এর দুই খেলোয়াড়ের, নাম জানলে আপনিও হবেন অবাক

চরম উদ্বিগ্ন জাতিসংঘের মহাসচিব: এদিকে এই সামগ্রিক বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে গভীরভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছেন এবং এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, তিনি ঢাকায় আধিকারিকদের যুব জনগোষ্ঠীর সাথে একত্রে কাজ করার এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর