বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেক পিতা-মাতাই চান তাঁদের সন্তানকে ভালো ভাবে রাখতে এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে। কিন্তু, বহুক্ষেত্রেই আর্থিক দুর্বলতার কারণে তাঁদের সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। বরং সেক্ষত্রে ছোটবেলা থেকে সন্তানেরা আর্থিক অনটনের মধ্যে বড় হয়েও জীবনের সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে গড়ে তোলেন সাফল্যের এক অনন্য কাহিনি।
বর্তমান প্রতিবেদনেও আমরা ঠিক সেইরকমই একজনের কথা আপনাদের জানাবো যিনি ছোটবেলা থেকেই তীব্র অনটনের মধ্যে বড় হয়েও প্রবল পরিশ্রম এবং নিষ্ঠার জেরে কার্যত হারিয়ে দিয়েছেন অভাবকে। তিনি হলেন বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা প্রদীপ সিং।
একদম ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন প্রদীপ। পাশাপাশি, পড়াশোনায় বিপুল আগ্রহ ছিল তাঁর। কিন্তু, আর্থিক দুর্বলতার কারণে তাঁকে প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপেই বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকি, অসহায়, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ার কারণে কোচিংয়ের মাইনেও দিতে পারতেন না প্রদীপ।
তাঁর বাবা একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মী ছিলেন। একটা সময়ে ছেলের পড়াশোনা চালাতে গিয়ে বাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল তাঁকে। এই অবস্থা থেকেই নিজের জেদ এবং অদম্য নিষ্ঠার ফলে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই দেশের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা ইউপিএসসি-তে উত্তীর্ণ হয়ে ২০২০ সালে একজন IAS অফিসার হয়েছেন প্রদীপ।
এদিকে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় প্রদীপের এই সফর অত্যন্ত কঠিন ছিল। আর্থিক ভাবে দুর্বল থাকার কারণে মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও কোচিং সেন্টারের ফি দিতে পারতেন না তিনি। এদিকে, ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য তাঁকে দিল্লি চলে যেতে হয়।
সেই সময় তাঁর বাবা ছেলের পড়াশোনার জন্য বাড়ি বিক্রি করে দেন। কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ছেলের কোনোরকম অসুবিধে হোক তা চাননি প্রদীপের বাবা-মা। তবে, আজ কঠোর পরিশ্রম এবং মা-বাবার আশীর্বাদের জেরে বর্তমানে IAS অফিসার হয়েছেন প্রদীপ।
এদিকে, প্রদীপের এই সাফল্যের কাহিনি ফের একবার প্রমাণ করে দিয়েছে যে, লক্ষ্য পূরণ করতে হলে সমস্ত বাধাকে দূরে সরিয়েই এগিয়ে যেতে হবে, যা নিঃসন্দেহে উদ্বুদ্ধ করবে দেশের ছাত্রছাত্রীদের।