বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চার বছর আগে বড়সড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছিল মালদহ। বন্যায় ডুবে গিয়েছিল বহু বাড়িঘর। আশ্রয়হীন হয়েছিল অজস্র মানুষ। আর সেই বন্যার ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার সেই দুর্নীতি নিয়েই রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০১৭ সালের বন্যায় ত্রাণ বিলি নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছিল, সেটা আজ কার্যত স্বীকার করে নিল রাজ্য।
আর সেই কারণেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় মমতা সরকারকে। আদালত তোপ দেগে জানতে চায় যে, চার বছর আগে হওয়ার দুর্নীতির পরেও কি এতদিন ঘুমিয়েছিল সরকার? আদালতের পক্ষ থেকে এই দুর্নীতির মামলা অবিলম্বে রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই হলফনামার ভিত্তিতেই আগামী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে আদালতের তরফ থেকে।
উল্লেখ্য, ২০১৭-র বন্যায় মালদহে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রাজ্যের তরফ থেকে বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বড় ঘোষণা করে বলে হয় যে, যাদের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ৭০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। ১৪ হাজার মানুষের একটি তালিকাও তৈরি করা হয়। সেই তালিকাটিকে স্বীকৃতি দেন খোদ বিডিও সাহেব। এরপর ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু, বন্যায় প্রকৃত ভাগে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন যে, ওই তালিকায় ব্যাপক গরমিল রয়েছে।
দাবি করা হয় যে, যেই ১৪ হাজারের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল, তাঁর মধ্যে ৭ হাজার জনের নাম এমন রয়েছে, যাদের সবার ফোন নম্বর একটি। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বন্যার দুই বছর পর বিডিও সাহেব কার্যত স্বীকার করে নেন যে, কোথাও একটা দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু বিডিওর স্বীকারোক্তি আর ৭ হাজার জনের একই ফোন নম্বর কাণ্ড সামনে আসার পরেও এখনও রাজ্যের তরফ থেকে সেই দুর্নীতি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর এতেই চটে যায় হাইকোর্টে ভারপ্রাপ্ত বিচাপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
বেঞ্চের তরফ থেকে রাজ্যকে তোপ দেগে বলা হয় যে, এতদিন কেটে গেলেও রাজ্য কোনও পদক্ষেপ নেয় নি কেন? সরকার কী ঘুমিয়েছিল? আদালতের তরফ থেকে এই মামলায় রাজ্যকে একটি হহলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার আগামী শুনানি ৫ আগস্ট।