বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ ২৬ জুলাই কারগিল দিবস (Kargil Diwas) লাগাতার পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে নিজের জীবন তুচ্ছ করে যারা জয় এনে দিয়েছিলেন ভারতকে আজ তাদের স্মরণ করার দিন। ভারতেরই এই বীর শহীদদের একজন অমল কালিয়া। ১২ জম্মু-কাশ্মীর লাইট ইনফ্যান্টরির সেনানী ছিলেন তিনি। ভারতের জন্য মাত্র ২৫ বছর বয়সে নিজের জীবন বলিদান দেন ক্যাপ্টেন অমল কালিয়া (Amal Kaliya)।
শহীদ অমলের বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক। পিতা সৎপাল কালিয়ার (Satpal Kaliya) কাছ থেকেই দেশপ্রেমের পাঠ পেয়েছিলেন অমল। যার জেরে ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশ করার পরেও অমল বেছে নিয়েছিলেন ভারতীয় আর্মিকে। অমলের বাবা বলেন, “আমি নিজে একজন শিক্ষক ছিলাম, ছাত্র-ছাত্রীদের দেশপ্রেমের পাঠ পড়াতাম। আমার মনে হয়েছিল, দেশপ্রেম নিজের বাড়ি থেকে শুরু হওয়া উচিত। তাই আমার নির্দেশেই অমল ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ভারতীয় আর্মিতে যোগদান করে।”
ক্যাপ্টেন অমল কালিয়া ছিল পর্বত যুদ্ধে দক্ষ। ভারতীয় সেনার হয়ে বাটালিকের দুর্গম অঞ্চলে পয়েন্ট ৫২০৩ কে পাকিস্তানের দখল থেকে মুক্ত করার জন্য এক অসম্ভব লড়াই লড়ে ছিলেন তিনি। কালিয়ার পাশেই যখন শহীদ হন আরেক ভারতীয় জওয়ান। নিজেই মেশিনগান কাঁধে তুলে নেন। তাদের এই অসম্ভব লড়াইয়ের জন্যই পাকসেনাদের দখল থেকে মুক্ত হয় বাটালিকের পয়েন্ট ৫২০৩। ক্যাপ্টেন অমল কালিয়ার অসামান্য কৃতিত্বের কথা স্মরণ করে মরণোত্তর বীর চক্র পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় তাকে।
নিজের বাড়ির ছাদে প্রিয় পুত্রের স্মৃতিতে একটি কামানের মডেল তৈরি করিয়েছেন পিতা সৎপাল কালিয়া। এই কামানের মুখটি ঘোরানো রয়েছে পাকিস্তানের দিকে। এর কারণ জানতে চাওয়া হলে সৎপাল কালিয়া বলেছিলেন, ‘ক্যাপ্টেন আমল কালিয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১২ জম্মু- কাশ্মীর লাইট ইনফ্যান্টরিতে ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হলে পদাতিক সৈনিক প্রথমে বন্দুক নিয়ে এগিয়ে যায়, কিন্তু বন্দুকের একটি মডেল তৈরি করা সহজ ছিল না। এজন্য কামানের মডেলটি তৈরি করেছি আমরা। ক্যাপ্টেন অমল কালিয়া নিজের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করেছিলেন, গুলি চালিয়েছিলেন পাকিস্তান সৈনিকদের উদ্দেশ্যে। তাই এই কামানের মুখটিও পাকিস্তানের দিকে রাখা হয়েছে।”