বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনে চলার পথ প্রত্যেকের জন্য সমান নয়। বরং কারো কারো ক্ষেত্রে তা হয় অত্যন্ত কন্টকাকীর্ণ। কিন্তু, যাঁরা সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করে এগিয়ে চলেন লক্ষ্যপূরণের দিকে তাঁরাই তৈরি করেন এক অনবদ্য উত্তরণের কাহিনি। বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক সেইরকমই এক লড়াকু ছাত্রীর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি আজ সকলের কাছে হয়ে উঠেছেন এক অনুপ্রেরণা। শুধু তাই নয়, তিনি এখন তাঁর গ্রামের প্রথম মহিলা ডাক্তারের স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
টেম্পো চালকের মেয়ে হলেন ডাক্তার:
বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা যাঁর কথা বলছি তাঁর নাম হল নাজিয়া। তিনি রাজস্থানের ঝালাওয়ার জেলার পাচপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা। নাজিয়া সম্প্রতি NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ৬৬৮ তম স্থান অর্জন করেন। যার ফলে তিনি এবার সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
জানা গিয়েছে, নাজিয়ার বাবা ইসামুদ্দিন পেশায় একজন টেম্পো চালক। আর তাঁর মা আমিনা বিবি গ্রামে ক্ষেতমজুরের কাজ করেন। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও পড়াশোনায় কোনো খামতি রাখেননি তিনি।
নাজিয়া অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী:
নাজিয়া ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। দশম শ্রেণিতে ভালো নম্বর পাওয়ায় তিনি সরকারি বৃত্তিও পান। পাশাপাশি, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় তিনি ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। তারপরে তিনি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য কোটার অ্যালেন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং বৃত্তির টাকাতেই তিনি পড়াশোনার খরচ সামলে নেন।
পরিবার পড়াশোনার বিরোধিতা করেছিল:
মূলত, নাজিয়ার পরিবারে মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় তেমন কোনো চল ছিলনা। এমতাবস্থায়, নাজিয়ার বাবা যখন তাঁকে NEET পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন, তখন পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। কিন্তু নাজিয়ার বাবা-মা সেই কথায় কর্ণপাত না করে মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পড়াশোনার সুযোগ দেন। আর তারপরেই নাজিয়া বিরাট সফলতা পান।
Despite financial constraints, 22-yo Nazia, a tempo #driver’s #daughter, cleared #NEET and is set to become the first #doctor in her #village. It took her 4 attempts, but she never lost hope & brought laurels to her family & village. Kudos to her!#Education #Motivation pic.twitter.com/NfPSyNotLZ
— Ketto (@ketto) November 24, 2021
চতুর্থ প্রচেষ্টায় মেলে সাফল্য:
নাজিয়া পরপর তিনবার NEET পরীক্ষায় ব্যর্থতার সম্মুখীন হন। তা সত্ত্বেও, নাজিয়া হাল ছাড়েননি। বরং আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তিনি চতুর্থ প্রচেষ্টায় সাফল্য পান। আপাতত মেডিকেল কলেজে ভর্তির পর নাজিয়া ডাক্তারি পড়বেন। এরপর তিনি হবেন তাঁর গ্রামের প্রথম মহিলা চিকিৎসক। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নাজিয়া এবং তাঁর বাবা-মায়ের কাছে অত্যন্ত গর্বের। অন্যদিকে নাজিয়া এই সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব তাঁর বাবা-মাকে দিয়েছেন।