বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিজ্ঞানীরা সূর্য (Sun) সম্পর্কে এবার এক চমকপ্রদ তথ্য সামনে নিয়ে এলেন। জানা গিয়েছে যে, বর্তমানে সূর্যের মধ্যে কার্যত আলোড়ন চলছে। এমতাবস্থায়, সূর্যের ১১ বছরের সৌর চক্রের কারণেই ওই ঘটনা ঘটছে বলে জানা গিয়েছে। কারণ, এই চক্র সূর্যকে অত্যন্ত সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি, বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে, এর ফলে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সূর্যে বিস্ফোরণের ঘটনা অব্যাহত ঘটবে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে, মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই, সূর্য ৩৫ টি করোনাল মাস ইজেকশন (Coronal Mass Ejections, CME), ১৪ টি সানস্পট এবং ছয়টি সোলার ফ্লেয়ার নির্গত করেছে। যদিও, সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগই পৃথিবীতে না পৌঁছলেও কিছু আবার আমাদেরকে প্রভাবিত করেছে। বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, সূর্যে বিস্ফোরণের ফলে সৌর শিখা এবং করোনাল মাস ইজেকশন (CME) হতে পারে। যা মহাকাশের উপগ্রহ এবং পৃথিবীতে থাকা পাওয়ার গ্রিডগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
পাশাপাশি, রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, করোনাল মাস ইজেকশন সূর্যের পৃষ্ঠের বৃহত্তম অগ্ন্যুৎপাতগুলির মধ্যে একটি। মূলত, এগুলি হল সৌর প্লাজমার বড় মেঘ। একটি সৌর বিস্ফোরণের পরে, এই মেঘগুলি মহাকাশে সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এমতাবস্থায়, মহাকাশে তাদের ঘূর্ণনের কারণে, তারা প্রসারিত হয় এবং প্রায়শই সেগুলি কয়েক লক্ষ মাইল দূরত্বে পৌঁছে যায়।
শুধু তাই নয়, কখনও কখনও সেগুলির সাথে গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্রেরও সংঘর্ষ হয়। এমতাবস্থায়, যখন তাদের অভিমুখ পৃথিবীর দিকে থাকে, তখন তারা ভূ-চৌম্বকীয় ব্যাঘাতও ঘটাতে পারে। এইসব কারণে স্যাটেলাইটে শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনা থাকে এবং পাওয়ার গ্রিডও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পাশাপাশি এগুলির প্রভাব বেশি হলে, তারা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা মহাকাশচারীদেরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
এদিকে, জানা গিয়েছে বর্তমানে সূর্যের গায়ে সানস্পটের উপস্থিতিও বেড়েছে। আর এই কারণেই সোলার ফ্লেয়ার নির্গত হচ্ছে। জানিয়ে রাখি যে, যখন সূর্যের চৌম্বক শক্তি নির্গত হয় তখন সেখান থেকে নির্গত আলো এবং কণাগুলি সৌর শিখা গঠন করে। সর্বোপরি, এগুলি কোটি কোটি হাইড্রোজেন বোমার সমতূল্য শক্তি নির্গত করতে পারে।
এমতাবস্থায়, সৌর চক্র সম্পর্কে বলতে গেলে জানাতে হয় যে, এই চক্র মোট ১১ বছর যাবৎ চলে। এই সময়ে, সূর্যের ক্রিয়াকলাপ তার শীর্ষে পৌঁছে যায় এবং সৌরচক্র শেষ হওয়ার সাথে সাথে সূর্য ক্রমশ শান্ত হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) কয়েকদিন আগে একটি ব্লগ পোস্ট করে জানিয়েছে যে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত সৌর ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকবে।