৬ টি ভূমিকম্প সহ্য করেও দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী বিল্ডিং! তবুও ৪০ বছর ধরে রয়েছে খালি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে এবং চাহিদার ওপর ভর করে ক্রমশ বেড়ে চলেছে বহুতলের (Multi-Storey Building) সংখ্যা। বিশ্বের সর্বত্রই এই রেশ এখন পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একটি বিল্ডিংয়ের বিষয়ে জানাবো যেটিকে বিশ্বের সবথেকে মজবুত বিল্ডিং হিসেবে বিবেচিত করা হয়। অর্থাৎ, সেটি পৃথিবীর সবথেকে নিরাপদ বিল্ডিং গুলির মধ্যে অন্যতম একটি। যেটির নাম হল “Torre Insignia”। মেক্সিকোতে (Mexico) অবস্থিত ২৫ তলার এই বিল্ডিংটি ৪১৭ ফুট উঁচু। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, গত ৩৮ বছরে এই বিল্ডিংটি ৬ টি ভূমিকম্পের হাত থেকে বেঁচে গেছে। আর সেই কারণেই এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বিল্ডিং হিসেবে প্রাধান্য দেন সবাই। তবে, এই বিল্ডিংটি প্রায় ৪০ বছর ধরে খালি রাখা হয়েছে।

দ্য সানের রিপোর্ট অনুসারে, এই ভবনটি ১৯৮৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৬ টি বড় ভূমিকম্পের শিকার হয়েছিল। যদিও, সেটির কাঠামোর কোনো ক্ষতি হয়নি। এর মধ্যে মেক্সিকো সিটিতে ১৯৮৫ সালে ঘটা বিধ্বংসী ভূমিকম্পও সামিল রয়েছে। যার তীব্রতা রিখটার স্কেলে ছিল ৮.০। এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে টিকে থাকা যেকোনো বিল্ডিংয়ের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। কিন্তু মেক্সিকো সিটির মাঝখানে এখনও গর্বের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে “Torre Insignia”।

কেন বিল্ডিংটি খালি রয়েছে: জানা গিয়েছে যে, নিরাপত্তাজনিত কারণে এই ভবনের মূল কাঠামোটি এখন খালিই দাঁড়িয়ে রয়েছে। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬২-র মধ্যে এর নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণগুলি ছিল কংক্রিট, গ্লাস এবং অ্যালুমিনিয়াম। ভবনটির ভিতরে বেশ কয়েকটি তলা খালি রয়েছে। যেটিতে একসময় সরকারি ব্যাঙ্ক ব্যানোব্রাসের সদর দফতর ছিল। ১৯৮৫ সালে প্রথম ভূমিকম্পের পর থেকে এই বিল্ডিংটি খুব কম ব্যবহারের কারণে খালি পড়ে আছে।

আরও পড়ুন: চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় সুযোগ! বিপুল শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি PSC-র, এভাবে করুন আবেদন

বিল্ডিংয়ের ডিজাইন: জানিয়ে রাখি যে, মোট ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮০৬ বর্গফুট ফ্লোর এরিয়া এবং ৮৩ হাজার ০৫৬ বর্গফুটের ফ্লোর সহ এটি মেক্সিকোর দ্বিতীয় সবথেকে উঁচু বিল্ডিং হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বিল্ডিংয়ের ডিজাইনও অবাক করার মতো। ত্রিভুজাকার প্রিজম আকারে তৈরি এই বিল্ডিং মেক্সিকো সিটির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা যায় না। এর একপাশে ম্যানুয়েল গ্যাঞ্জালেজ মেট্রোবাস স্টেশন রয়েছে।

আরও পড়ুন: থাকেন না লাইমলাইটে! ইনিই হলেন নীতা আম্বানির বোন, শিক্ষকতা করেই কাটছে জীবন

এই বিল্ডিংয়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ক্যারিলন রয়েছে: বিশ্বের সবথেকে উঁচু ক্যারিলন এখনও এই ভবনে রয়েছে। এটি একটি বাদ্যযন্ত্র। যা এই ভবনটির সবথেকে উঁচু তলায় রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই বাদ্যযন্ত্রটি বেলজিয়াম সরকার উপহার দিয়েছিল। যেটিতে ৪৭ টি ঘণ্টা রয়েছে। যা প্রাক্তন ডাচ ফাউন্ড্রি পেটিট অ্যান্ড ফ্রিটসেন দ্বারা তৈরি করা হয়। এটির ওজন ২৬ টন। পাশাপাশি, বাদ্যযন্ত্রটি ১২৫ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

বিশেষ অনুষ্ঠানে বাজানো হত ক্যারিলন: ভূমিকম্পের আগে পর্যন্ত ইয়োলান্ডা ফার্নান্দেজ ডি কর্ডোবা ছিলেন সেখানকার প্রধান ক্যারিলনিস্ট। কিন্তু যখন ভবনটি জনশূন্য হয়ে পড়ে, তখনও তিনি বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্যারিলন বাজিয়েছিলেন। তবে, ২০১৮ সালে ইয়োলান্ডা মারা যান বলে খবর মেলে। পাশাপাশি, এটাও মনে করা হয় যে, তিনিই মেক্সিকোর একমাত্র জীবিত ক্যারিলনিস্ট ছিলেন। এমতাবস্থায়, “Torre Insignia”-তে ফের ক্যারিলন বাজবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর