কলেজে পড়াকালীন পান দুর্দান্ত আইডিয়া! বন্ধুকে সাথে নিয়েই ২১ বছর বয়সে কোম্পানি দাঁড় করালেন যুবক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরির (Job) মাধ্যমে নিশ্চিন্তে জীবন অতিবাহিত করতে চান সকলেই। তবে, বর্তমান সময়ে গতানুগতিকভাবে চাকরির পথে না হেঁটে বরং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন কাজের মাধ্যমে নিজেদের কেরিয়ার গড়ছেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, ঝুঁকি নিয়ে এইসব কাজ শুরু করে কেউ কেউ সেখানে পাচ্ছেন বিরাট সফলতাও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একজন যুবকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি মাত্র ২১ বছর বয়সেই নিজের কোম্পানি (Company) তৈরি করে বর্তমানে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই তিনি সকলের কাছে দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন।

জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন: আমরা যে যুবকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব তিনি হলেন অঙ্কিত দুবে অর্পণ। ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন অঙ্কিত। তাঁর বাড়ি বিহারের চম্পারণে। অঙ্কিতের বাবা হলেন সঞ্জীব দুবে ও মায়ের নাম বিমল দেবী। ছোটবেলা থেকেই অঙ্কিত পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলেন। স্থানীয় স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর তিনি জেলার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। অঙ্কিত বৃন্দাবনের জওহর নবোদয় বিদ্যালয় থেকে দশম শ্রেণি এবং সমস্তিপুরের জওহর নবোদয় বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেন। এমতাবস্থায়, স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে অঙ্কিত আইএমএস নয়ডায় যোগ দেন এবং স্নাতকের পর্ব শুরু করেন।

   

কলেজে ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা গভীরভাবে বুঝতে পারেন: এই প্রসঙ্গে অঙ্কিত জানিয়েছেন, পড়াশোনার সময় থেকেই তাঁর মধ্যে স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছা জন্মেছিল। নিজের খরচ নিজেই বহন করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই অঙ্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, যে তিনি ফ্রিল্যান্স রাইটিং করবেন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ পেতে সফল হলেও তাঁর ওই অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো ছিল না। কারণ, তিনি কাজ পেলেও ওই কাজের ক্ষেত্রে সঠিক টাকা পাননি। এমতাবস্থায়, তিনি এর পেছনের কারণ জানতে শুরু করেন। নিজে নিজেই রিসার্চের ভিত্তিতে অঙ্কিত জানতে পারেন যে শুধু তিনিই ফ্রিল্যান্সের নামে প্রতারণার শিকার হননি। বরং সারা দেশে অনেক ফ্রিল্যান্সারেরই অবস্থা তাঁর মতোই ছিল।

এক বন্ধুর সাহায্যে তিনি ২১ বছর বয়সে কোম্পানি স্থাপন করেন: অঙ্কিতের মতে, একদিন পড়াশোনা করার সময় তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু করবেন। এই প্রসঙ্গে তিনি তাঁর এক বন্ধুর সাথে আলোচনা করেন। তারপরেই ওই বন্ধুর সাহায্যে ২১ বছর বয়সে, তিনি নিজের কোম্পানি স্থাপন করেন এবং সেটির নাম দেন “দ্য রাইটার্স কমিউনিট”। করোনার সময়, এটির মাধ্যমে তিনি বাড়িতে থেকেই মানুষকে সংযুক্ত করার কাজ করেছিলেন। শুরুতে একাধিক সমস্যা এলেও অঙ্কিত তাঁর বন্ধু শান্যাকে নিয়ে তাঁদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।

ধীরে ধীরে কঠোর পরিশ্রমের ফল পেতে শুরু করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, ক্রমশ সবাই যোগ দিতে শুরু করেন তাঁদের সাথে। অঙ্কিতের মতে, বর্তমানে “দ্য রাইটার্স কমিউনিটি” ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।ল যেখানে তাঁদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ এবং লেখার সাথে সম্পর্কিত কাজ দেওয়া হয়েছে। Unacademy, Byjus, ParikshaAdda এবং Embibe-এর মতো অনেক কোম্পানিতে তাঁদের সহায়তায়, ফ্রিল্যান্সাররা পরিষেবা প্রদান করছেন এবং আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন।

৪০০ যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন: শুধু তাই নয়, অঙ্কিত দাবি করেছেন যে তিনি এখনও পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি যুবক-যুবতীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সাররা স্ক্রিপ্ট রাইটিং, রিভিউ রাইটিং, ভিডিও এডিটিং-এর মতো একাধিক কাজ করতে পারছেন। অঙ্কিত শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফলে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দিচ্ছেন ওই প্রতিষ্ঠানে।

The young man founded the company at the age of 21 with his friend

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, অঙ্কিতকে “গ্লোব অ্যাওয়ার্ডস”-এর ষষ্ঠ বার্ষিক শ্রেষ্ঠ ব্যবসায়িক পুরস্কারের তালিকায় বাড়িতে থেকে কাজ করার দক্ষতার বাস্তবায়নের জন্য “সিলভার গ্লোবি অ্যাওয়ার্ড”-এর মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, নিজের পুরোনো দিনের কথা মনে করে অঙ্কিত জানান, একটা সময় ছিল যখন কেউ তাঁকে চিনতে পারেনি। কিন্তু আজ গোটা এলাকা তাঁকে চিনেছে। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক যুবক-যুবতী তাঁকে তাঁদের মেন্টর হিসেবেও বিবেচিত করেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর