বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। মূলত, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের (Indian Oil Corporation Limited, IOCL) পাইপলাইন থেকে তেল চুরির মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। যেখানে ৭ জনকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। তবে, সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা জানার পরেই রীতিমতো চমকে যাবেন সবাই। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা প্রায় ২ মাস ধরে তেল চুরির প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং ৪০ মিটার দীর্ঘ টানেল তৈরি করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে যে, বেশকিছু সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার লিটার তেল চুরি করা হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭ অভিযুক্তের ওই নেটওয়ার্ক পোচনপুর গ্রাম এবং বিজবাসন তেল ডিপোতে সরবরাহ হওয়া IOCL-এর পাইপলাইন থেকে কিভাবে তেল চুরি করত তা চার্জশিটে উপস্থাপিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত বছরের অক্টোবরে সংশ্লিষ্ট তেল কোম্পানির আধিকারিকরা তাঁদের পাইপলাইন থেকে সম্ভাব্য চুরির বিষয়ে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তারপরেই পুলিশ তদন্ত শুরু করলে দেখা যায় দ্বারকার পোচনপুর গ্রামে মাটির নিচে একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা দু’টি প্লাস্টিকের পাইপের সঙ্গে যুক্ত একটি ভালভ মেশিন ব্যবহার করে পাইপলাইনের ভেতরে গর্ত করে তেল উত্তোলন করেছিল। অভিযোগ রয়েছে, টানেলের মধ্য দিয়ে প্রায় ৪০ মিটার দূরে রাকেশের (বাড়িওয়ালা) জায়গায় দু’টি প্লাস্টিকের পাইপ রাখা হয়েছিল। পাশাপাশি, এই চুরির বিষয়টি আড়াল করতে অভিযুক্তরা গমের আটা ও নুড়ি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত পাত্রে তেল ঢেলে ট্রাক্টরে বোঝাই করত।
আরও পড়ুন: IPL খেলবেন না শামি, চোটের কারণে বাদ গোটা মরশুম থেকেই! ছিটকে যেতে পারেন বিশ্বকাপ থেকেও
কিভাবে ধরা পড়ল চুরি: এদিকে, ক্রমাগত তেল চুরির কারণে পাইপলাইনে প্রেশার কমে যাওয়ার অভিযোগ সামনে আসে। এমতাবস্থায়, ২০২৩-এর ৪ অক্টোবরে, IOCL আধিকারিকরা একটি অভিযোগ দায়ের করেন। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকেই চুরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। সেই সময়ে প্রধান অভিযুক্ত সুদেশ গুপ্ত পাইপলাইনের কাছে একটি দোকান খোলে। পাশাপাশি, সে বাড়িওয়ালা রাকেশকে তার আসল নাম জানায় নরেশ। যেটি ছিল ভুয়ো নাম।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মোস মিসাইল কেনার জন্য ১৯ হাজার কোটির অনুমোদন কেন্দ্রের, আরও শক্তিশালী হবে ভারতীয় নৌসেনা
চার্জশিট অনুসারে, সুদেশ নরেশ ভার্মা নামে রাকেশের সাথে দেখা করে এবং তাকে স্ক্র্যাপ এবং বোতলের কাজ জন্য একটি প্লট ভাড়া দিতে বলে। এরপর মুরাদি ও ববি নামে দু’জনকে ডাকা হয়। তারা টানেল খনন এবং পাইপলাইনে গর্ত তৈরিতে পারদর্শী ছিল। এমতাবস্থায়, সমগ্ৰ কাজ আড়াই মাসের মধ্যে শেষ করা হয়। এরপর পাইপলাইনে ড্রিলিং করে একটি ভালভ স্থাপন করে তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হয়। এদিকে, আরও জানা গিয়েছে যে, পাইপলাইন থেকে তেল তোলার পর অভিযুক্তরা তা পালওয়ালের একটি গুদামে নিয়ে যেত। সেখান থেকে সুদেশ, রশিদ ও রাম গ্রাহকদের কাছে ওই তেল বিক্রি করত বলেও অভিযোগ রয়েছে।