বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের একবার কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল চিন (China)। শুধু তাই নয়, এবার ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইডো ক্রসেটো জানিয়েছেন, চার বছর আগে চিনের বহুকাঙ্ক্ষিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) প্রকল্পে ইতালির যোগ দেওয়ার বিষয়টি ছিল একটি “তাৎক্ষণিক এবং বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত”। গত রবিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ক্রসেটো বলেন, চিনের এই প্রকল্পে চিন ব্যবসায় লাভবান হলেও ইতালির কোনো লাভ হয়নি।
উল্লেখ্য যে, ইতালির পূর্ববর্তী সরকার এই চিনা প্রকল্পে স্বাক্ষর করেছিল। পাশাপাশি, ইতালি এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করা প্রধান পশ্চিমি দেশ ছিল। কিন্তু ইতালির বর্তমান সরকার চিনের এই প্রকল্পের বিষয়ে অনুতপ্ত এবং তারা এটি থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায়। জানিয়ে রাখি যে, এই BRI প্রকল্প চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একটি কাঙ্ক্ষিত পরিকল্পনা। যার মাধ্যমে তিনি চিনকে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য সংযুক্ত করতে চান। একে নতুন সিল্ক রুটও বলা হয়।
এই প্রকল্পে বৃহৎ পরিকাঠামো নির্মাণে চিন বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করছে। তবে সমালোচকরা জানিয়েছেন, চিন এটিকে তার ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রসেটো জানিয়েছেন, “নতুন সিল্ক রোডে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্তটি তাড়াহুড়ো করে নেওয়া হয়েছিল এবং এটি একটি বিধ্বংসী সিদ্ধান্ত ছিল। এই কারণে ইতালিতে চিনের রপ্তানি বহুগুণ বেড়ে গেলেও ইতালির তেমন কোনো লাভ হয়নি।”
যদিও, ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, চিন হল ইতালির একটি পার্টনার এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখা হবে। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে আজ ইস্যু হচ্ছে চিনের সাথে সম্পর্কের ক্ষতি না করে কিভাবে BRI প্রকল্প থেকে সরে আসা যায় তা দেখা। কারণ এটি সত্য যে চিন আমাদের প্রতিযোগী কিন্তু তারা আমাদের অংশীদারও।”
কি জানালেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী: বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাতের পর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন, তাঁর সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এর পাশাপাশি মেলোনি ঘোষণা করেছেন যে, তিনি শীঘ্রই চিনে সফর করবেন।
BRI প্রকল্পের সমালোচনা: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, চিন তার BRI প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১০০ টি দেশে বিনিয়োগ করেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে ২,৬০০ টি BRI প্রকল্প চলছে। যেখানে চিন ৭৭০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। এদিকে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলিকে ঋণের জালে আটকানোর অভিযোগ রয়েছে চিনের বিরুদ্ধে। প্রথমে ওই দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলে চাপ সৃষ্টি করে সেইসব দেশের সম্পদ যথেচ্ছভাবে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে জিনপিংয়ের দেশের বিরুদ্ধে। তবে, চিন এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। পাশাপাশি, ওই দেশ জানিয়েছে পশ্চিমি দেশগুলি তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এই ধরণের ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে।