শুধু চিন-আমেরিকাই নয়! পুতিনের ভারত সফরে চিন্তা বাড়ছে এই দেশেরও

Published on:

Published on:

This country is concerned for India-Russia strong relation.
Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবার ভারতের (India-Russia) উদ্দেশে রওনা হয়েছেন এবং তিনি ৪–৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে থাকবেন। এই সফরকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কারণ, পুতিনের এই সফরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে প্রায় ২৫টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও মহাকাশ গবেষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ভ্লাদিমির পুতিনের এই বৈঠকের দিকে আমেরিকা, চিন, ব্রিটেন সহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেরই নজর রয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমী শক্তিগুলির মধ্যে এই সফরকে কেন্দ্র করে অস্বস্তি বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

পুতিনের দিল্লি সফরে আরও মজবুত হতে চলেছে ভারত-রাশিয়ার (India-Russia) সম্পর্ক:

পুতিনের এই সফরের সঙ্গে মিলিয়ে রাশিয়ার আন্তর্জাতিক টিভি নেটওয়ার্ক RT (Russia Today) ভারতেও (India-Russia) নিজেদের নতুন চ্যানেল RT India–র আনুষ্ঠানিক সম্প্রচার শুরু করতে চলেছে। ৫ ডিসেম্বর এই চ্যানেল উদ্বোধন করবেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট পুতিন। দিল্লির অত্যাধুনিক স্টুডিও থেকে RT India ইংরেজিতে দৈনিক চারটি সংবাদ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। নেটওয়ার্কটির দাবি, ভারত ও রাশিয়ার ঐতিহ্যগত কূটনৈতিক বন্ধুত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুই দেশের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করা তাদের প্রধান লক্ষ্য। বর্তমানে ভারতের ১৮টি বড় অপারেটরের পরিষেবায় RT–র আন্তর্জাতিক ইংরেজি চ্যানেল রয়েছে এবং প্রায় ৬৭৫ মিলিয়ন সম্ভাব্য দর্শক এই নেটওয়ার্কের আওতায়। ভারতের বাজারে RT India–র প্রবেশ তাই পশ্চিমী মিডিয়ার জন্যও নতুন প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে।

আরও পড়ুন:‘আদালত মধ্যযুগের নাইট নয়’, ৩২ হাজার মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের কোথায় ভুল? দেখাল হাই কোর্ট

RT India–র সূচনাকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। কারণ, চ্যানেলটি ‘Imperial Receipts’ নামে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের ওপর একটি বহু–পর্বের বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। এই সিরিজে ভারতীয় সংসদের বিদেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুরকে দেখা যাবে, যিনি ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। জানা গিয়েছে, সিরিজটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শোষণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবে, যা ব্রিটেনের কূটনৈতিক অস্বস্তি আরও বাড়াতে পারে। ভারত–রাশিয়ার (India-Russia) কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা এবং মিডিয়া সহযোগিতাকে পশ্চিমী শক্তিগুলি গভীর নজরদারিতে রাখছে বলে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে।

এদিকে, পুতিনের ভারত (India-Russia) সফরের ঠিক আগেই জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের শীর্ষ কূটনীতিকরা মিলে একটি কঠোর সম্পাদকীয় লেখেন, যা ১ ডিসেম্বর টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়। এই যৌথ মতামত কলামে তিন দেশের রাষ্ট্রদূত—জার্মানির ফিলিপ একারমান, ফ্রান্সের থিয়ারি ম্যাথিউ এবং ব্রিটিশ হাই কমিশনার লিন্ডি ক্যামেরন—রাশিয়া ও পুতিনের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, রাশিয়া প্রতিদিন ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে, যেখানে শিশু–সহ সাধারণ নাগরিকরা প্রাণ হারাচ্ছেন। স্কুল, হাসপাতাল ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে টার্গেট করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন।

This country is concerned for India-Russia strong relation.

আরও পড়ুন: বাবরি মসজিদ তৈরির ইস্যুতে বড় পদক্ষেপ! হুমায়ুনকে দল থেকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল

এই তিন রাষ্ট্রদূত আরও দাবি করেন যে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুদ্ধবিরতি ও শান্তির পক্ষে অবস্থান নিলেও রাশিয়া নাকি সেই প্রচেষ্টাকে এগোতে দিচ্ছে না। ঠিক এই সময়েই পুতিনের ভারত সফর এবং ভারত–রাশিয়ার (India-Russia) কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতার বার্তা পশ্চিমী বিশ্বকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির এই সূক্ষ্ম টানাপোড়েনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে ভারত–রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, যা আগামী কয়েক বছর দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।