বাংলা হান্ট ডেস্ক: অবশেষে শুরু হয়ে গেল লোকসভা নির্বাচন। শুক্রবার অর্থাৎ ১৯ এপ্রিল থেকেই শুরু নির্বাচনের প্রথম দফা। এমতাবস্থায়, লোকসভা নির্বাচনের একদম শুরুতেই কূটনৈতিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করল ভারত (India)। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, চিনকে (China) কোণঠাসা করে তুলতে ইতিমধ্যেই ভারত ফিলিপিন্সের (Philippines) সঙ্গে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত করেছে। সেই চুক্তিতে ফিলিপিন্সে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানির বিষয়টি রয়েছে। এমতাবস্থায়, শুক্রবার সকালেই প্রথম দফায় ফিলিপিন্সে পোঁছল ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র।
ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ব্রহ্মোস পৃথিবীর দ্রুততম সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতের DRDO (Defence Research and Development Organisation) এবং রাশিয়ার NPO Mashinostroyeniya যৌথ ভাবে ব্রহ্মোস তৈরি করলেও ব্রহ্মোসের ৮৫ শতাংশই কিন্তু ভারতে তৈরি। এদিকে, স্বাভাবিকভাবেই ফিলিপিন্সের সঙ্গে এই চুক্তির ফলে ভারতের সামরিক সরঞ্জাম রফতানিতেও বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। মূলত, ভারতের তরফে ফিলিপিন্সের সঙ্গেই এই সময়ের সর্ববৃহৎ সামরিক রফতানি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, শুক্রবারই ফিলিপিন্স পেয়ে গেল ভারতের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র। জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় বায়ুসেনার IAF C-17 বিমানের মাধ্যমে ফিলিপিন্সে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হয়েছে। গভীর রাতে নাগপুর থেকে রওনা দেওয়া বায়ুসেনার ওই বিমান শুক্রবার ভোরেই ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় পৌঁছে গিয়েছে। যদিও, সঙ্গে তিনটি সাধারণ বিমানও থাকবে। যেগুলিতে অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সহ ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের সহায়ক যন্ত্রাংশ থাকবে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গোবর থেকে তৈরি কংক্রিট! গ্রীষ্মকালে ঘর হবে AC-র মতো ঠান্ডা! নয়া সৃষ্টি IIT-র গবেষকদের
কেন ফিলিপিন্স কিনছে এই ক্ষেপণাস্ত্র: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ভারতে তৈরি ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপিন্সের উপকূলীয় নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হবে। এমনিতেই পশ্চিম ফিলিপিন্স সাগরে আধিপত্য নিয়ে ফিলিপিন্সের চিনের সঙ্গে সংঘাত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কূটনীতিকরা মনে করছেন যে, ভারতের সঙ্গে ফিলিপিন্সের এই সামরিক চুক্তি চিনের ওপর চাপ বৃদ্ধি করবে। এই চুক্তি ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: “IPL-এ কিছুই শেখার নেই”, থেমে গেল মুস্তাফিজুরের সফর, অদ্ভুত “অজুহাত” BCB-র
পাশাপাশি, এই সামরিক চুক্তির খরচ হল মোট ২,৭০০ কোটি টাকা। যেটির মাধ্যমে ফিলিপিন্স ২৯০ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি কিনছে। এছাড়াও, ভারত ক্ষেপণাস্ত্রের ৩ টি ব্যাটারিও তাদের বিক্রি করছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফিলিপিন্স নৌসেনার ২১ জন সৈনিককে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। এদিকে, ফিলিপিন্সের সঙ্গে ভারতের এই চুক্তি বিদেশে সামরিক সরঞ্জাম রফতানির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই প্রথম সামরিক সরঞ্জাম রফতানির বিষয়ে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এত বড় চুক্তি স্বাক্ষর করল ভারত। এর পাশাপাশি, এই চুক্তিটি ফিলিপিন্সের সাথে ভারতের সখ্যতা বাড়িয়ে চিনকে চাপে রাখার কৌশলের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।