নতুন ভাবনাতেই বিরাট সাফল্য! লখনউর এই দম্পতি যা করে দেখালেন… উদ্বুদ্ধ করবে আপনাকেও

Published on:

Published on:

This couple's Success Story will inspire you.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বায়োফর্টিফায়েড বীজের সাহায্যেই নিজেদের সাফল্যের গল্প (Success Story) লিখলেন উত্তর প্রদেশের এই দম্পতি।কয়েক বছর আগেও সুখবিন্দর সিংহের বায়োফর্টিফায়েড বীজ সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। কিন্তু আজ উত্তর প্রদেশের এই কৃষক ওই বিশেষ বীজ ব্যবহার করে নিজের ৫.৫ একর জমিতে গম চাষ করছেন এবং ফলাফলে ভীষণই খুশি। এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছেন লখনউয়ের তরুণ দম্পতি — ঐশ্বর্যা ভট্টনাগর এবং প্রতীক রস্তোগি। তাঁদের উদ্যোগ ‘গ্রীনডে’ শুধু কৃষকদেরই নয়, গ্রাহকদেরও দিচ্ছে এক নতুন দিশা। তারা এমন এক চাষপদ্ধতি ও বীজের প্রচার করছেন যা বেশি পুষ্টিকর, পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাঁরা এখন কোটি টাকার টার্নওভার তৈরি করেছেন।

প্রতীক ও ঐশ্বর্যের অসাধারণ সফলতার কাহিনি (Success Story)

৪৯ বছর বয়সি সুখবিন্দর সিংহ একসময় উদ্বিগ্ন ছিলেন অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারে। তাঁর মতে, এসব সার যেমন মাটির ক্ষতি করে, তেমনই মানুষের শরীরের জন্যও বিপজ্জনক। তাই তিনি বিনিয়োগ করেন জিঙ্ক-সমৃদ্ধ বায়োফর্টিফায়েড বীজে। ফলাফল — তাঁর উৎপাদিত গমের গুণমান অনেক বেড়ে গেছে। সুখবিন্দর বলেন, “আমার বাচ্চারা এখন বলে এই গমের রুটি আগের চেয়ে অনেক সুস্বাদু। এতে আমরা নিশ্চিত যে তারা পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাবার পাচ্ছে (Success Story)।”

আরও পড়ুন:মজুত রয়েছে টন টন হলদু ধাতু! পড়শি রাজ্যেই মিলল “সোনার খনি”-র সন্ধান

এই বীজ ব্যবহারে তাঁর উৎপাদন খরচও কমেছে। আগে যেখানে প্রতি একরে তিন বস্তা ইউরিয়া ব্যবহার করতে হত, এখন অর্ধেক বস্তাই যথেষ্ট। যদিও এই বীজে ফলন কিছুটা কম, কিন্তু উন্নত মান ও কম খরচে সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। তাছাড়া তিনি এখন প্রতি কুইন্টাল গম ২৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন, যেখানে সাধারণ গমের দাম ছিল মাত্র ২০০০ টাকা। সুখবিন্দরের মতোই উত্তর প্রদেশের অন্তত ১৫,০০০ ক্ষুদ্র কৃষক এখন বায়োফর্টিফায়েড বীজ ব্যবহার করছেন, যার পেছনে মূল ভূমিকা গ্রীনডে’র। এই দম্পতির প্রচেষ্টা কৃষকদের আয় বাড়ানোর পাশাপাশি পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে কুপুষ্টি দূর করতেও সাহায্য করছে (Success Story)।

প্রতীক রস্তোগি ২০১৬ সালে আইআইএম আহমেদাবাদ থেকে এমবিএ শেষ করে কৃষিক্ষেত্রে কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সবাই তাঁকে উন্নত রাজ্য যেমন মহারাষ্ট্র বা গুজরাটে কাজ শুরু করার পরামর্শ দিয়েছিল, কিন্তু তিনি উত্তর প্রদেশের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন— যেখানে কৃষি উন্নয়নের বিপুল সুযোগ ছিল। এক বছর কর্পোরেট জগতে কাজ করার পর তিনি চাকরি ছেড়ে স্ত্রী ঐশ্বর্যার সঙ্গে সীতাপুরে ফিরে আসেন। ঐশ্বর্যা, যিনি আইএইচএম বোম্বে থেকে ফুড সায়েন্স ও নিউট্রিশনে পড়াশোনা করেছেন, তিনিও স্বামীর সঙ্গে এই কৃষি বিপ্লবে শামিল হন (Success Story)।

This couple's Success Story will inspire you.
প্রতীক রাস্তোগী এবং ঐশ্বর্য ভাটনগর

আরও পড়ুন:৭ ম্যাচ, ০ জয়! মহিলা বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পারফরম্যান্সে হতাশ নকভি, বড় সিদ্ধান্ত নিল PCB

২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাঁরা ‘গ্রীনডে’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল — কৃষিক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবন আনা এবং ফসলের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা। প্রতীকের কথায়, “আমরা চেয়েছিলাম কৃষকের আয় বাড়ুক, আর দেশের মানুষ পুষ্টিকর খাদ্য পাক।” বর্তমানে গোরখপুর, বস্তি, গোঁডা, বারাবাঁকি-সহ একাধিক জেলায় গ্রীনডে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করছে (Success Story)।

ঐশ্বর্যা বলেন, “সীতাপুরে কৃষকদের সঙ্গে আড়াই বছর কাজ করার পর আমরা বুঝেছিলাম, একটি ছোট বীজের মধ্যেই আছে বিরাট পরিবর্তনের শক্তি।” বর্তমানে গ্রীনডে’র বার্ষিক টার্নওভার ১০ কোটি টাকারও বেশি, আর তাঁদের প্রচেষ্টায় উত্তর প্রদেশের গ্রামীণ কৃষিতে শুরু হয়েছে এক নতুন সবুজ অধ্যায় (Success Story)।