বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত রবিবার একটি মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সাইরাস মিস্ত্রি (Cyrus Mistry)। মহারাষ্ট্রের পালঘর হাইওয়েতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। আহমেদাবাদ থেকে মুম্বই ফেরার পথে দুপুর ৩ টে ১৫ থেকে সাড়ে তিনটে নাগাদ পালঘরের চারোটিতে সূর্য নদীর উপর একটি ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা মারে সাইরাসের ধূসর রঙের মার্সিডিস। এমতাবস্থায়, গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকা সাইরাস মিস্ত্রি এবং জাহাঙ্গীর পান্ডোলে নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
এদিকে, রবিবার গভীর রাতে জেজে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন। পাশাপাশি জানা গিয়েছে যে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত মার্সিডিসটি চালাচ্ছিলেন মুম্বাইয়ের বিখ্যাত চিকিৎসক তথা স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ অনাহিতা পান্ডোলে। গাড়ির সামনের সিটে তাঁর সঙ্গে বসেছিলেন তাঁর স্বামী দারিয়াস প্যান্ডোলে। বর্তমানে তাঁদের দু’জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
যদিও, ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান সাইরাস মিস্ত্রি ও জাহাঙ্গীর পান্ডোলে। জাহাঙ্গীর ছিলেন টাটা গ্রুপ অফ কোম্পানির প্রাক্তন ডিরেক্টর দারিয়াস পান্ডোলের ভাই। ওই চারজন গত রবিবার গুজরাট থেকে মুম্বাই ফিরছিলেন। এমতাবস্থায়, মুম্বাই থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে চারোটির কাছে সূর্য নদীর উপর একটি সেতুতে থাকা ডিভাইডারে ধাক্কা মারে গাড়িটি। এদিকে, সোমবার, গুজরাটের ভাপি শহর থেকে সড়কপথে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অনাহিতা এবং তাঁর স্বামীকে। জানা গিয়েছে, অনাহিতা পান্ডোলের অস্ত্রোপচার করা হবে। পাশাপাশি, তাঁর স্বামী আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।
অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাঁদের: সূত্রের খবর অনুযায়ী, অনাহিতা পান্ডোলে এবং তাঁর স্বামী দারিয়াস পান্ডোলেকে গ্রিন করিডরের মাধ্যমে সোমবার সকালে অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্যে ভাপির রেইনবো হাসপাতাল থেকে মুম্বাইয়ের এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইংরেজি সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে যে, অ্যাম্বুলেন্সটি ভোর ৬ টায় ভাপি থেকে রওনা হয়ে সকাল ৯ টার দিকে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে পৌঁছয়।
অক্সিজেনের মাত্রা খুবই কম: এই প্রসঙ্গে রেইনবো হাসপাতালের মালিক ডাঃ তেজস শাহ বলেন, “ডাঃ অনাহিতাকে যখন আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন তাঁর রক্তচাপ রেকর্ডযোগ্য ছিল না এবং তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৪৫ থেকে ৬৫-র মধ্যে (স্বাভাবিকভাবে এটি ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ হওয়া উচিত)। তাঁর পেলভিক ইনজুরি ছিল এবং রক্তের পরিমানও কম ছিল । আমরা তাঁকে সিটি স্ক্যানের জন্যও নিয়ে যেতে পারিনি। তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। ঘণ্টা দু’য়েক পর তিনি সাড়া দিতে শুরু করেন।”
অবস্থা স্থিতিশীল: ডক্টর শাহ আরও জানিয়েছেন যে, “রবিবার রাত ন’টার দিকে তিনি সামান্য সাড়া দিতে শুরু করেন। আমি তাঁকে গুজরাটি ভাষায় কেম ছো (কেমন আছো) জিজ্ঞেস করেছিলাম এবং তিনি উত্তর দিয়েছিলেন যে, তিনি গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন। তবে মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। গভীর রাতের পরে দু’টি কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স আমাদের হাসপাতালে আসে এবং গ্রিন করিডোর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমরা স্থানীয় পুলিশকে ভালসাদে একটি গ্রিন করিডোর তৈরি করতে বলি।”