বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যানবাহণের সংখ্যা। বিশেষ করে করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর ফলে লকডাউন চলাকালীন মোটর বাইক এবং গাড়ি কেনার সংখ্যা হু হু করে বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায়, রাস্তায় যানবাহণ সঠিকভাবে চালানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োজন হয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের (Driving License)। এদিকে, আগামী ১ জুন থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের নিয়মে বড় পরিবর্তন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে Regional Transport Office বা RTO-তে গিয়ে আর ড্রাইভিং পরীক্ষা করতে হবে না। এদিকে, এই নয়া নিয়মগুলি লঙ্ঘন করার ক্ষেত্রে জরিমানা হতে পারে ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।
ড্রাইভিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিয়ম বদল: মূলত, ১ জুন থেকে সরকারি RTO-র পরিবর্তে, বেসরকারি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই ড্রাইভিং পরীক্ষা দেওয়া যাবে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলিকে লাইসেন্সের যোগ্যতার জন্য পরীক্ষা পরিচালনায় এবং সার্টিফিকেট প্রদানের লক্ষ্যে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হবে। এদিকে, এই অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি ড্রাইভিং স্কুলগুলির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক কিছু নতুন নিয়ম জারি করেছে। যেগুলি মধ্যে অন্যতম হল ড্রাইভিং স্কুলগুলিতে ন্যূনতম ১ একর জমি থাকতে হবে। পাশাপাশি, চার চাকার গাড়ির প্রশিক্ষণের জন্য থাকতে হবে ন্যূনতম ২ একর জমি।
এছাড়াও, স্কুলগুলিকে উপযুক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি প্রশিক্ষকদের অবশ্যই কোনো হাই স্কুলের ডিপ্লোমা বা তার সমতুল্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও, প্রয়োজন ৫ বছরের ড্রাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা। বায়োমেট্রিক্স এবং আইটি সিস্টেমের পরিচয়ও থাকা প্রয়োজন।
প্রশিক্ষণের সময়: এবারে আসি সামগ্রিকভাবে প্রশিক্ষণের সময়কালের প্রসঙ্গে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী হালকা মোটর গাড়ির ক্ষেত্রে জন্য ৪ সপ্তাহে ২৯ ঘন্টার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যার মধ্যে ২১ ঘন্টা বরাদ্দ থাকবে প্র্যাক্টিক্যালের জন্য। এদিকে, ভারী মোটরগাড়ির জন্য ৬ সপ্তাহে কমপক্ষে ৩৮ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এক্ষেত্রে, প্র্যাক্টিক্যালের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৩০ ঘন্টা সময়।
আরও পড়ুন: এবার রিচার্জ ছাড়াই দেখতে পাবেন টিভি চ্যানেল! Free Dish বসাচ্ছে সরকার, এভাবে করুন আবেদন
হতে পারে বিপুল জরিমানা এবং শাস্তি: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, নির্ধারিত গতির থেকে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ১,০০০ থেকে ২,০০০ টাকা জরিমানা করা হবে। এদিকে, কোনো নাবালক যদি দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে জরিমানা দিতে হবে ২৫,০০০ টাকা। এর পাশাপাশি ওই গাড়ির মালিকের রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাবে। এমনকি, সংশ্লিষ্ট নাবালককে ২৫ বছর পর্যন্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। অপরদিকে কেউ যদি লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাতে গিয়ে ধরা পড়েন সেক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ হল ৫০০ টাকা। পাশাপাশি, হেলমেট না পরে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে এবং সিটবেল্ট না পরে গাড়ি চালানোর জন্য জরিমানা বরাদ্দ করা হয়েছে ১০০ টাকা।
আরও পড়ুন: সবুজ-মেরুনকে বিদায় জানালেন ডার্বির নায়ক! এই ফুটবলারও ছাড়লেন মোহনবাগান
জানিয়ে রাখি যে, এই নতুন নিয়মগুলির অন্যতম লক্ষ্য হল দূষণ কমানো। যে কারণে, প্রায় ৯ লক্ষ পুরনো সরকারি যানবাহণকে পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে। এর পাশাপাশি গাড়ির ধোঁয়া নির্গমনের বিষয়ে কঠোর বিধি প্রয়োগ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে, সামগ্রিকভাবে লাইসেন্সের জন্য আগের প্রক্রিয়া পূর্বের মতোই রয়েছে। সেক্ষেত্রে, আবেদনকারীরা https://parivahan.gov.in-এ গিয়ে অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এমতাবস্থায়, নতুন লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পদ্ধতি আগের তুলনায় অনেকটাই সরল করা হয়েছে।