বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি (February) মাস সাধারণত শীতের আবহের সাথেই অতিবাহিত হয়। কিন্তু, চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি থেকেই গরম স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি, ওই মাস থেকেই গরমের জেরে রীতিমতো ঘামতে শুরু করেছেন সবাই। মূলত, জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) কারণে এই অবস্থা ভারতের পাশাপাশি গোটা বিশ্বজুড়েই ঘটছে।
ঠিক এই আবহেই এবার এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। জানা গিয়েছে, আগামী মাসগুলিতে ভারত, পাকিস্তান এবং এই দেশগুলির আশেপাশের অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ ঘটতে পারে। উল্লেখ্য যে, গত বছরের এপ্রিলেও এই অঞ্চলের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল। মূলত, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে, তাপপ্রবাহ বছরের পর বছর আরও তীব্র হয়ে উঠছে। যার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষও প্রাণ হারাচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে, MEER.org-এর চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার পিটার ডাইনস তাঁর টুইটে জানিয়েছেন, “এই বার গ্রীষ্ম ভারতের জনগণকে বেঁচে থাকার চূড়ান্ত সীমার দিকে ঠেলে দিতে পারে। ফেব্রুয়ারির রেকর্ড গরম অনুভব করার পরে আসন্ন সপ্তাহগুলিতে তাপমাত্রা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।” এদিকে, পিটার ভারতের কথা জানালেও, তাঁর সতর্কবার্তা ভারতের প্রতিবেশী দেশসহ সমগ্র অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য। তিনি আরও লিখেছেন, “বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এই অঞ্চলটিতে ওয়েট-বাল্বের (Wet-bulb) গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।”
ওয়েট-বাল্ব তাপমাত্রা কি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ওয়েট-বাল্ব তাপমাত্রা হল তাপ এবং আর্দ্রতার সেই চরম মাত্রা যার পর মানুষ আর উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। পিটার লিখেছেন, “সবচেয়ে বিপজ্জনক ওয়েট-বাল্ব ঘটনাগুলির মধ্যে একটি শিকাগোতে ঘটেছে। সেখানে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক এবং দরিদ্র তাঁরা অত্যধিক তাপ এবং আর্দ্রতায় মারা গেছেন। ১৯৯৫ সালের এই তাপপ্রবাহটি ছিল মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়গুলির মধ্যে একটি।”
This summer may push India closer to the limits of human survival. Rising temperatures are forecast in the coming weeks after India experienced its hottest February on record. The region is at serious risk of wet-bulb if global temperatures continue to rise. pic.twitter.com/UlJ6694Vav
— Peter Dynes (@PGDynes) March 27, 2023
মানচিত্রে কোথায় কোথায় তাপপ্রবাহের প্রকোপ রয়েছে: এদিকে, পিটার গরমের এই তীব্রতাকে স্পষ্টভাবে উপস্থাপিত করার জন্য একটি মানচিত্র শেয়ার করেছেন। যেখানে দেখা গিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের একটি বড় অংশ ভয়াবহ গরমের কবলে পড়তে পারে। এছাড়াও, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল এবং করাচি, লারকানা, মুলতানের মতো শহরগুলিও গরমের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই দেশটি “তীব্র জল সঙ্কটের” দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে পাকিস্তানের কৃষিকার্যে। এদিকে, গত বছরের বন্যার পর ইতিমধ্যেই সেখানে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়েছে।