বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাকিস্তান (Pakistan), চিন (China) এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের শত্রু ড্রোনগুলির হুমকি মোকাবিলায় এবার ভারতীয় নৌবাহিনী আইএনএস বিক্রমাদিত্য ও বিক্রান্তের মতো যুদ্ধজাহাজের জন্য কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম কিনতে ৪৯০ কোটি টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যেই গত ২৯ অগাস্ট জারি করা একটি টেন্ডার ডকুমেন্ট থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গিয়েছে। এদিকে, রিকোয়েস্ট অফ ইনফরমেশন (RFI) নথিতে বলা হয়েছে, “ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, যুদ্ধজাহাজ এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর উপকূলীয় স্থাপনায় ব্যবহারের জন্য কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম (সফট কিল) সংগ্রহ করতে চায়।”
এদিকে, সামগ্রিকভাবে এই বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ শত্রুপক্ষের ড্রোন ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। আর সেই জন্যই ড্রোন-বিরোধী সিস্টেম সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। নৌবাহিনীও এখন এই ধরণের সিস্টেম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ সমুদ্রে এবং দেশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে শত্রুপক্ষের ড্রোন থেকে হুমকির বিষয়টি বজায় রয়েছে। উল্লেখ্য যে, ভারতীয় নৌবাহিনীর দু’টি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ, আইএনএস বিক্রান্ত এবং আইএনএস বিক্রমাদিত্য, ৮ টি যুদ্ধজাহাজ এবং বিভিন্ন ডেস্ট্রয়ার এবং ফ্রিগেট রয়েছে। এমতাবস্থায়, ভারতীয় বিক্রেতাদের কাছ থেকে কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম সংগ্রহ করা হবে।
রাডারের মাধ্যমে ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজ: টেন্ডার ডকুমেন্টে বলা হয়েছে, “সিস্টেমটি একটি জাহাজে ইনস্টল ও চালিত হতে হবে এবং উপকূল ভিত্তিক স্থাপনা থেকেও চালিত হতে হবে।” মোবাইল ভার্সান সহ আকাশ এবং স্থলের লক্ষ্যগুলির জন্য অবিচ্ছেদ্য রাডারের মাধ্যমে ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজও থাকতে হবে। এছাড়াও, রাডারে ৫ কিমি বা তার বেশি দূরত্বে মিনি/মাইক্রো ড্রোন সনাক্ত ও ট্র্যাক করার ক্ষমতা থাকার পাশাপাশি ড্রোনের সিগন্যালের দিক চিহ্নিত করে তাদের আটকানোর বিষয়টিও লক্ষ্য রাখতে হবে। ভারতীয় নৌবাহিনীর সহযোগিতায় DRDO দ্বারা একটি অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে এবং সেটি ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড দ্বারা নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Indian Railways: এটিই হল ভারতের দীর্ঘতম নামের রেল স্টেশন, এর উচ্চারণ করতে গেলে মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন!
কিভাবে কাজ করবে অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম: ওই সিস্টেমে ড্রোন যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সিগুলি জ্যাম করার ক্ষমতা থাকবে এবং হুমকির মূল্যায়ন এবং টার্গেটের শ্রেণিবিভাগ (ন্যানো/মিনি/মাইক্রো ড্রোন, ইত্যাদি), লক্ষ্য অগ্রাধিকার, এনগেজমেন্ট প্ল্যানিং, ফায়ার কন্ট্রোল ক্ষমতা এবং অপারেটর করতে সক্ষম নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রের মাধ্যমে লক্ষ্য নির্ধারণ করতেও পারবে। উল্লেখ্য যে, কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: গয়না বিক্রি করে কিনে দিয়েছেন পুজোর জামা! দায়িত্ব নিয়েছেন ১৫০ জন শিশুরও, আজ সবার “মসিহা” ছোটুদা
ভারতীয় নৌবাহিনীর ড্রোন ক্ষমতা কেমন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারতীয় ও চিনা সৈন্যদের মধ্যে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর, নৌবাহিনী ২০২০ সাল থেকে ২ টি জেনারেল অ্যাটমিকস দ্বারা তৈরি সিগার্ডিয়ান নজরদারি ড্রোন লিজে ব্যবহার করছে। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও বাড়ানোর জন্য ভারত সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩১ টি সশস্ত্র প্রিডেটর ড্রোন (MQ-9B) কেনারও পরিকল্পনা করছে।